মসুর ডালের ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জানুন

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে অনেকেরই তেমন কোন ধারণা নেই। তাদের সুবিধার্থে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো মসুর ডালের বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা সহ ত্বক ও চুলের যত্নে মসুর ডাল, মসুর ডাল খেলে মোটা হয় কিনা

মসুর-ডালের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

মসুর ডাল খেলে গ্যাস ও এলার্জি হয় কিনা, প্রতিদিন মসুর ডাল খেলে কি উপকার হয়, মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক সহ আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত। চলুন তাহলে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত জেনে নিন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে। প্রতিটি জিনিসেরই কিছু উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতাও রয়েছে। ঠিক তেমনি মসুর ডালের কিছু উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। মূলত মসুর ডাল কম বেশি আমাদের সবারই অনেক পছন্দ খাবার। তাই অবশ্যই এর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আপনি যে জিনিসটা খাচ্ছেন তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী বা ক্ষতিকর এটা জানা খুবই প্রয়োজন। তারপরেও যদি হয় সেটি অনেক প্রিয় খাবার, তাহলে তো কথাই নেই। বাঙ্গালীদের খাবার তালিকায় ডাল ছাড়া চলে না, আর তা যদি হয় মসুর ডাল তাহলে তো কোন কথাই নেই। এছাড়াও এমন অনেকেই আছেন যাদের প্রতিদিন মসুর ডাল ছাড়া চলেই না। চলুন তাহলে বেশি কথা না বলে এই জনপ্রিয় ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নিন।

মসুর ডালের উপকারিতা

মসুর ডালের উপকারিতা গুলো কি তা অনেকেই জানেন না। তবে চলুন আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে জেনে নিন। প্রতিটি বাঙ্গালীদের জনপ্রিয় একটি খাবারের মধ্যে মসুর ডাল অন্যতম। বাঙ্গালীদের প্রতিদিন খাবার তালিকায় মসুর ডাল ছাড়া জমেই না। প্রোটিনে ভরপুর মসুর ডাল যেমন স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী, ঠিক তেমনি রূপচর্চা জন্য অনেক উপকারী। 

তাছাড়া এতে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন যেমন ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই যা আমাদের শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে থাকে। তবে প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকার পরেও এটি অতিরিক্ত খাওয়া উচিত না। এতে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া সুস্বাদু স্বাদে ভরা এই ডাল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও মসুর ডালে রয়েছো আরো অনেক উপকারিতা চলুন তাহলে বিস্তারিত দেখে নিন।

  • মসুর ডালে রয়েছে ফাইবার যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও দারুন কাজ করে।
  • মসুর ডালে রয়েছে প্রোটিন ও ক্যালোরি যা স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে।
  • নিয়মিত মসুর ডাল খেলে হার্টের ঝুঁকি কমে। কেননা এতে রয়েছে ফলেট ও ম্যাগনেসিয়াম যা হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • মসুর ডালে রয়েছে দব্রনীয় ফাইবার যা কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে, স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • মসুর ডাল হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, ধমনী পরিষ্কার করে।
  • মসুর ডাল খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ দূর করে ভালো কোলেস্টেরল পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
  • মসুর ডাল হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কেননা এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ যা হজমে সাহায্য করে।
  • মসুর ডাল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দারুন কার্যকারী এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • বার্ধক্য রোধ করে তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে কেননা এতে রয়েছে আন্টি এজিং উপাদান।
  • চোখ ভালো রাখতে সহায়তা করে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • ত্বকের যত্নে মসুর ডাল দারুন কাজ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, ত্বক করে তুলে মসৃণ ও কোমল। 
  • দাঁত ভালো রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ডাল খাওয়ার ফলে দাঁত হয় মজবুত ও শক্ত। এছাড়াও শিশুদের দাঁত ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
  • হাড় মজবুত করতেও সহায়তা করে এই মসুর ডাল।
  • পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে খুদা ভাব কমায় ওজন কমাতে সাহায্য করে।

মসুর ডালের অপকারিতা

মসুর ডালের অপকারিতা গুলো সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক কোন ধারণা নেই। তাদের সুবিধার্থে আজকের আর্টিকেলে মাধ্যমে জানাবো মসুর ডালের অপকারিতা গুলো সম্পর্কে। আশা করি অনেকেই অনেক উপকারে আসবে। কেননা মসুর ডালের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানা আমাদের সবার জন্য উচিত। প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় যে খাবার আমরা খাচ্ছি। 

সেটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ভালো বা খারাপ, তা জানা সবার জন্যই খুবই প্রয়োজন। অফুরন্ত পুষ্টি ভান্ডার সহজলভ্য হওয়ায় যে কেউ পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারে এই ডাল থেকে। তাছাড়াও সুস্বাদু এই ডাল দিয়ে তৈরি বিভিন্ন রকম মুখরাচক খাবার আমাদের সবারই খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও মাংসের বিকল্প হিসেবেও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে থাকে এই মসুর ডাল। তবে বেশ কিছু উপকারিতা ও অপকারিতাও রয়েছে এই ডালে। চলুন তাহলে সেগুলো জেনে নিন।

  • অতিরিক্ত মসুর ডাল খাওয়ার ফলে পেটে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন গ্যাসের সমস্যা, এসিডিটি ইত্যাদি।
  • বেশি পরিমাণ মসুর ডাল খেলে দেহে ইউরিক অ্যাসিডেন্ট মাত্র বৃদ্ধি করে। 
  • এছাড়াও এতে অধিক পরিমাণ পিউরিক রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য ভালো না।
  • মসুর ডাল খাওয়ার ফলে বাতের ব্যথা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।
  • অতিরিক্ত মসুর ডাল খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • মসুর ডালে রয়েছে অফুরন্ত প্রোটিন যা শরীরের ওজন দ্রুত বাড়াতে পারে।
  • মসুর ডাল বেশি পরিমাণে খেলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।কেননা এতে রয়েছে অক্সালেটর যা কিডনিতে পাথর তৈরি করে।

মসুর ডালের পুষ্টিগুণ

মসুর ডালের পুষ্টি গুন গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে। এই ডালে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা করে এই ডাল।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরকে সুস্থ সতেজ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে।

তবে এখন চলুন এর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান গুলো সম্পর্কে জেনে নিন। এতে রয়েছে খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফলেট, আমিষ, শর্করা ইত্যাদি। এছাড়াও আরো রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন

প্রতি ১০০ গ্রাম মসুর ডাল রয়েছে পুষ্টি উপাদান

  • জলীয় অংশ ১২.৪ গ্রাম
  • খাদ্য শক্তি ৩৪৩ কিলো ক্যালরি
  • ক্যালসিয়াম ৬৯ মিলিগ্রাম
  • খনিজ পদার্থ ২.১ গ্রাম
  • ভিটামিন বি২ ৪৯ মিলিগ্রাম
  • শর্করা ৫৯.০ মিলিগ্রাম
  • আমিষ ২৫. ১ গ্রাম
  • চর্বি ৬০ গ্রাম
  • আঁশ ৬০ গ্রাম
  • লোহা ৪৮ মিলিগ্রাম

মসুর ডাল খেলে কি মোটা হয়

মসুর ডাল খেলে কি মোটা হয় এটি অনেকেই জানতে চান। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নিন। ডালের মধ্যে জনপ্রিয় একটি ডাল হল মসুর ডাল, যা প্রতিটি বাঙালিদের খুবই পছন্দ। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইডেট যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়াও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সহায়তা করবে। এছাড়াও মসুর ডালের রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও ফলেট বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে রক্ষা করে। 
মসুর-ডালের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

এছাড়াও ক্ষুধা ভাব কমায়, পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে, ওজন বৃদ্ধি রোধ করে, মসুর ডালে থাকা ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং দ্রুত মেদ কমাতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন নিয়ম করে মসুর ডাল খেতে পারেন। এটি আপনার ওজন কমাতে দারুন কাজ করবে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম, আয়রন, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার, ভিটামিন ইত্যাদি ঘাটতি পূরণ করে। আশা করি বুঝতে পারছেন মসুর ডাল মোটা হতে সাহায্য করে কিনা।

ত্বকে মসুর ডালের উপকারিতা

ত্বকে মসুর ডালের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। মসুর ডাল দিয়ে যেমন মজার মজার অনেক খাবার তৈরি হয়, ঠিক তেমনি ত্বকের যত্নেও মসুর ডাল দারুন কাজ করে। কেননা এই ডালে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, থায়ামিন, ডায়াটারি ফাইবার যা শরীরে বিভিন্ন ভাবে উপকার করে থাকে।

এছাড়াও ত্বকের ক্ষতিকর উপাদান গুলো দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকে সুন্দর ও উজ্জ্বল করতে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও মসুর ডালের ফেসপ্যাক ত্বকের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করে। যার কারণে ত্বকে বয়সের ছাপ কমে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও কমল করতে সাহায্য করে। চলুন তাহলে ত্বকের যত্নে মসুর ডালের কিছু উপকারিতা দেখে নিন।

ত্বক উজ্জ্বল করেঃ ত্বক উজ্জ্বল করতে মসুর ডাল দারুণ কাজ করে। এইক্ষেত্রে মসুর ডালের ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এজন্য পরিমাণ মতো মসুর ডাল ভিজিয়ে ডালটা বেটে নিয়ে তার সঙ্গে এক চামচ কাঁচা দুধ ও প্রয়োজন মত বাদাম তেল একসাথে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে, উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। এভাবে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিলে দেখবেন। আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল প্রাণবন্ত ও সুন্দর।

ড্রাই ত্বকের যত্নে মসুর ডালঃ ড্রাই ত্বকের জন্য মসুর ডাল অনেক উপকারী। এছাড়াও এটি ব্রণ কমাতেও সাহায্য করে। ত্বককে করে তুলে নরম, তুলতুলে ও উজ্জ্বল। এজন্য আপনি মসুর ডাল পেস্ট করে তাতে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল পেস্ট করে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে নেবেন। দেখবেন দারুন ফলাফল পাবেন।

ফেইস হেয়ার পরিষ্কার করেঃ মসুর ডাল মুখের অবাঞ্চিত লোম দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য এক চামচ পরিমাণ মসুর ডালের গুড়া ও এক চামচ চালের গুড়া একসাথে মিশিয়ে পেস্ট করে তাতে এক চামচ দুধ ও বাদাম তেল ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে পাঁচ ছয় মিনিট রেখে ধুয়ে নিবেন।

ফেসওয়াশ হিসেবে কাজ করেঃ সারাদিনের ব্যস্ততায় বিভিন্ন পরিবেশ দূষণের জন্য আমাদের ত্বকের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। এ সমস্যা দূর করতে ত্বকের যত্নে মসুর ডাল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বক পরিষ্কার করতে খুব সাহায্য করে। এর জন্য আপনি এক চামচ মৌসুম ডাল বাটা, দুই চামচ দুধ, পরিমান মত হলুদ ও তিন ফোঁটা নারিকেল তেল একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট করে। পুরো মুখে লাগিয়ে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে ভালো করে ধুয়ে নেবেন।

ত্বকের মৃত কোষ দূর করেঃ মসুর ডাল আমাদের ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের উপরে জমে থাকা মৃত কোষ সরিয়ে ত্বককে করে তুলে প্রাণবন্ত। এজন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন পরিমান মত মসুর ডাল, পরিমাণ মত দুধ একসাথে মিশিয়ে ভালো করে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে নেবেন। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করবেন। এতে স্কিন বুড়িয়ে যাওয়া দূর হবে হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরে পাবেন।

ত্বকের আদ্রতার ঘাটতি দূর করেঃ ত্বকের বলিরেখা, শুষ্কতা দূর করে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে মসুর ডাল সাহায্য করে। এজন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন পরিমাণ মতো মসুর ডাল ও পরিমান মত মধু একসাথে মিশিয়ে ভালো করে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। এতে ড্রাইনেস কমবে, বলিরেখা দূর হবে, ত্বক সুন্দর হবে।

ত্বকের দাগ দূর করেঃ দাগ কমাতে মসুর ডাল দারুন কাজ করে। ত্বকের যত্নে মসুর ডালের ভূমিকা অনেক। এজন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন পরিমাণ মতো মসুর ডাল ও মধু ভালোভাবে একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এতে বিভিন্ন ধরনের দাগ, ছোপ ও ব্রণ কমে যাবে। ত্বক হয়ে উঠবে দাগ হীন ও উজ্জ্বল। কেননা এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ উপাদান।

ত্বক টানটান রাখেঃ ত্বক পরিষ্কার ও টানটান রাখতে নিয়মিত মসুর ডাল ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য মসুর ডাল ও দুধ, ডিমের সাদা অংশ একসাথে ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে। মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে ধুয়ে নেবেন। এতে আপনার ত্বক টান টান হবে।

বয়সের ছাপ দূর করেঃ মসুর ডাল বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও রোদে পরা ভাব দূর করে। এর জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন মসুর ডাল, বেসন ও আখরোটের গুঁড়া একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এটি আপনার বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করবে। এরপর ভালো একটি মশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন।

ব্রণ দূর করেঃ ব্রণ দূর করতেও মসুর ডাল দারুন কাজ করে। এর জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন মসুর ডাল ও মটরের ডাল গুড়া, গ্লিসারিন, কাঠবাদামের তেল, ও গোলাপজল একসাথে ভালো করে মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এটি ব্রণ দূর করতে ভালো কাজ করে। আর শুষ্ক ত্বক হলে মধু মিশিয়ে নিবেন এতে উপকার পাবেন। 

এছাড়া মসুর ডাল আমাদের ত্বকে আরো বিভিন্নভাবে উপকার করে থাকে। চুলের যত্নেও মসুর ডাল ভীষণ কার্যকারী। নিয়মিত মসুর ডাল ব্যবহার করার ফলে আমাদের স্ক্রিনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হতে পারে। এছাড়াও আপনার ত্বকে ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডস দূর করতেও মসুর ডালের গুড়া দারুন কাজ করে।

তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এজন্য অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। এছাড়াও অতিরিক্ত শুষ্ক হলে ব্যবহার না করায় উত্তম। যদি আপনার ত্বকে বিভিন্ন ধরনের র‍্যাশ, ব্রণ ও এলার্জির সমস্যা থাকে তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করবেন।

মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয়

মসুর ডাল খেলে কি গ্যাস হয় এটি অনেকেই জানতে চান। তাদের সুবিধার্থে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। ডালের মধ্যে মসুর ডাল আমাদের সবারই খুব পছন্দের খাবার। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি মসুর ডাল না থাকলে চলেই না। এছাড়াও এই মসুর ডালে রয়েছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা। 

তবে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কেননা এই ডালের রয়েছে ভিটামিন, ফাইবার, মিনারেল যা শরীরের বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করতে সহায়তা করে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন শরীরের স্বাস্থ্য উপকারিতা করে থাকে। তবে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য অবনতি হতে পারে। 

বেশি পরিমাণে মসুর ডাল খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস সহ আরো বিভিন্ন ধরনের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। বেশি পরিমাণে মসুর ডাল খাওয়ার ফলে হজম শক্তি হ্রাস পেতে পারে। এছাড়াও ওজন বৃদ্ধি হতে পারে, কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে, পেট ফুলে যেতে পারে, পেটে গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। আশা করি বিস্তারিত বুঝতে পারছেন তবে উপকার পেতে মসুর ডাল পরিমাণ মত খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

মসুর ডাল খেলে কি এলার্জি হয়

মসুর ডাল খেলে কি এলার্জি হয় এটি অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। চলুন তাহলে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিন। মসুর ডালে এলার্জি আছে কিনা বাঙ্গালীদের অন্যতম জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে মসুর ডাল একটি। এই ডাল দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মজাদার মুখরোচক খাবার খেতে আমরা সবাই খুব পছন্দ করি। এছাড়াও এই ডালটি সহজলভ্য ও সস্তা হওয়ায় সব শ্রেণীর মানুষ সহজে এটি খেতে পারে।

প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাছাড়াও মাংসের বিপরীতে প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য মসুরের ডাল অন্যতম। তবে মসুর ডালে রয়েছে এলার্জি যা খাওয়ার ফলে আপনার শরীর লাল হয়ে যেতে পারে ,র‍্যাশ হতে পারে ও চুলকানোর মতো সমস্যা দেখা দিতে। কিন্তু অনেকেরই এই ডালে এলার্জি দেখা দেয় না। এজন্য আপনি যদি মসুর ডাল খাওয়ার পরে

শরীরে চুলকানি, ফুলে ওঠা, লাল হয়ে যাওয়া, র‍্যাশ বের হওয়া এইসব লক্ষণগুলো দেখেন। তবে বুঝে নেবেন আপনার মসুর ডালে এলার্জি রয়েছে। যেমন আমার নিজেরই মসুর ডালে এলার্জি রয়েছে। আমি নিজেও মসুর ডাল খেতে পারি না। তাই যাদের এ ধরনের সমস্যা রয়েছে তাদের এই ডাল না খাওয়ায় উত্তম।

রাতে ডাল খেলে কি হয়

রাতে ডাল খেলে কি হয় এটি অনেকে জানতে চান। চলুন তাহলে এ বিষয়টি জানতে পুর আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং জানুন। বাঙ্গালীদের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার হল ডাল। ভাত ডাল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা আমরা ইতিমধ্যে উপরে আলোচনা করে আসছি। মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
মসুর-ডালের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। ডাল আমাদের শরীর, ত্বক ও চুলের জন্য দারুন উপকারি। এছাড়াও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে থাকে ডাল। তবে রাতে ভারী খাবার খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না। এটি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এজন্য রাতে হালকা খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

তবে রাতে আপনি চাইলে মসুর ডাল খেতে পারেন। কেননা মসুর ডাল খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। যেমন
  • রাতে ডাল খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়, হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়। 
  • রাতে ডাল ভাত খাওয়ার ফলে মাংসপেশি শক্তি বৃদ্ধি পায় শরীরকে সুস্থ রাখে
  • রাতে ডাল খাওয়ার ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে কেননা এতে রয়েছে ফাইবার যা চর্বি দূর করতে সাহায্য করে।
  • রাতে হালকা খাবারের ডাল ভাত খাওয়ার ফলে হার্টের সমস্যা দূর হয় হার্ট ভালো থাকে।
তবে অবশ্যই পরিমাণ মতো ডাল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কেননা অতিরিক্ত ডাল খাওয়ার ফলে বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এজন্য উপকারীতা পেতে পরিমাণ মতো ডাল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

প্রতিদিন মসুর ডাল খেলে কি হয়

প্রতিদিন মসুর ডাল খেলে কি হয় এটি অনেকেই জানতে চান। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নিন। মসুর ডালের রয়েছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা যা খাবার ফলে একাধিক সমস্যা দূর হয়, শরীর সুস্থ থাকে। এছাড়াও ত্বক ও চুলের জন্য মসুর ডাল অনেক কার্যকারী। তাছাড়াও বাঙ্গালীদের ডাল ভাত খুব পছন্দের একটি খাবার। এছাড়াও দামে সস্তা হওয়ায় সব শ্রেণীর মানুষ এটি খেতে পারেন এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারেন। চলুন তাহলে এবার মসুর ডালের পুষ্টি উপাদান গুলো দেখে নিন।
  • খনিজ পদার্থ
  • জলীয় অংশ
  • খাদ্য শক্তি
  • ক্যালসিয়াম
  • ভিটামিন বি টু
  • আমিষ
  • আশ
  • লৌহ
  • শর্করা
  • চর্বি
এই উপাদানগুলো রয়েছে যা আপনি প্রতিদিন খাওয়ার ফলে শরীরে পুষ্টি চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হয়ে থাকে। শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তাছাড়াও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। বিভিন্ন ধরনের হার্ট অ্যাটাক ও আরো অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। তাছাড়াও নিয়মিত মসুর ডাল খাওয়ার ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ দূর হয়। বলিরেখা দূর হয়, ত্বক হয়ে ওঠে সুন্দর ও উজ্জ্বল। তবে যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তারা এই ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক

মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে এবার বিস্তারিত জেনে নিন। আমরা ইতিমধ্যে মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে আসছি। আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে আসেন আশা করি উপকূত হয়েছেন। মসুর ডালের বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতার পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর  দিক রয়েছে যা সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। যেমন বাজারে বিক্রিত মসুর ডালে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য মিশানো থাকে। 

এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রং মিশানো থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মানুষ ঠকানো কাজ করে। যেমন অনেকেই বেশি লাভের আশায় কলায়ের ডাল ছোট করে মসুর ডাল হিসেবে বিক্রি করে থাকে। এজন্য বাজারে বিক্রিত ডাল খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তবে নিজেদের জমিতে চাষকৃত ডাল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি।তাই অবশ্যই বাজার থেকে ডাল কিনার সময় সচেতন হবেন।সঠিক ডাল যাচাই করে কেনার চেষ্টা করবেন।

শেষ কথাঃ মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি আজকের আর্টিকেলে। এছাড়াও মসুর ডালের বিভিন্ন ব্যবহার, ক্ষতিকারক দিক ও মসুর ডাল খেলে এলার্জি হয় কিনা, গ্যাস হয় কিনা, প্রতিদিন মুসুম ডাল খেলে কি উপকার হয়, ত্বকের যত্নে মসুর ডালের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে সহ আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 

প্রিয় পাঠক আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে প্রিয় খাবারটি আমরা খাচ্ছি, সেটি সম্পর্কে ধারণা রাখা বা জানা আমাদের সবার জন্য প্রয়োজন। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী ও অপকারী তা জেনে রাখা উচিত। প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে। তবে কমেন্ট করে মতামতটি জানাবেন। ভেজালমুক্ত খাবার খাবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লানিং টিপস ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url