ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা গুলো জানুন

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা গুলো সম্পর্কে অনেকেই জানতে অনেক আগ্রহী হন। তাদের জন্য আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি অনেক উপকারে আসবে। এছাড়াও আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব

ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ,দ্রুত ডায়াবেটিস কমে কি খেলে, ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় সবজি, ফল ইত্যাদি সহ আরো অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো।  চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নিন, আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে।

পোস্ট সূচীপত্রঃ ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা গুলো সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নিন। কেননা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্য তালিকা জানাটা খুবই জরুরী। বর্তমানে ঘরে ঘরে ডায়াবেটিস রোগী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত বয়স বাড়ার সাথে সাথে ডায়াবেটিস এর সংখ্যা বাড়ে বেশি। অস্বাভাবিক জীবন যাপন, মানসিক দুশ্চিন্তা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে।

ডায়াবেটিস একেবারে দূর করা সম্ভব না। তবে সঠিক কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের আনা যায়। এজন্য প্রয়োজন সঠিক খাদ্য অভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক জীবন যাপন, ডাক্তারের পরামর্শ মত ওষুধ গ্রহণ করা। তাছাড়াও আপনার বা আপনার বাসায় যদি কারো ডায়াবেটিস থাকে। তবে অবশ্যই নিষিদ্ধ খাবার গুলোর তালিকা জেনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কেননা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য নির্দিষ্ট কিছু খাবার গ্রহণ করার প্রয়োজন বা খুবই গুরুত্ব। কারণ  অস্বাভাবিক খাবার গ্রহণের ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিস রোগী ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। এজন্য একজন ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য সঠিক খাদ্য গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন। তাহলে চলুন এখন জেনে নিন নিষিদ্ধ খাবার তালিকা গুলো।

  • চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবারঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার খুবই ক্ষতিকর। এ ধরনের খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমায়। যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে।
  • দুধে তৈরি খাবারঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দুধের তৈরি কিছু কিছু খাবার খুবই ক্ষতিকারক। কেননা দুধ বা দুধের তৈরি খাবারের প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকলেও, কিছু কিছু দুধের তৈরি খাবারের উচ্চমাত্রায় সাজুরেটেড ফ্যাট থাকে। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই এই ক্ষেত্রে দই বা কম চর্বিযুক্ত দুধ ডায়াবেটিস রোগী খেতে পারেন।
  • শুকনো ফলঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শুকনো ফল অনেকটাই ক্ষতিকারক। কেননা এতে চিনির পরিমাণ থাকে বেশি। যেমন ৪৩ গ্রাম কিসমিসে চিনি থাকে পঁচিশ গ্রাম আবার ৫০ গ্রাম শুকনো খেজুরের চিনি থাকে ২৫ গ্রাম যা রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই এ ধরনের শুকনো ফল না খাওয়াই উত্তম।
  • চর্বিযুক্ত ও তেলেভাজা খাবারঃ এ ধরনের খাবার গুলো ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য খুবই ক্ষতিকর। কেননা এ ধরনের খাবারের ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জটিলতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • লবণঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য লবণের পরিমাণ ঠিক রাখা অন্তত জরুরি। বিশেষ করে সাধারণ লবণের তুলনায় বিট লবণ কিছুটা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। 
  • প্রক্রিয়াজাত মাংসঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রক্রিয়াজাত মাংস না খাওয়াই উত্তম। কেননা এগুলোর খাবার ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • দুধ চা ও কফিঃ ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য নিষিদ্ধ খাবারের মধ্যে দুধ রয়েছে কেননা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কঠিন করে তুলে এ ধরনের খাবার।
  • অ্যালকোহলঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা উচিত। কেননা অ্যালকোহল রক্তে শর্করার মাত্রা খুব দ্রুত পরিবর্তন করে। কখনো অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয়, আবার কখনো অতিরিক্ত কমিয়ে দেয়। যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ঝুঁকিপূণ্য।
  • প্যাকেটজাত খাবারঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কেননা এ ধরনের খাবারের চিনি ও শর্করা থাকে প্রচুর। 
  • সাদা চাল ও পাস্তা নুডুলসঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এ ধরনের খাবার গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। কেননা এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কঠিন করে তুলে।
  • কিসমিসঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিসমিস খাওয়ার ক্ষতিকর। কেননা কিসমিসে রয়েছে চিনি ও ক্যালোরি যা গ্লুকোজের মাথায় বাড়িয়ে দেয়।
  • ভুট্টাঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভোট্রা ক্ষতিকর কেননা অতিরিক্ত ভুট্টা খেলে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
  • ক্যান্ডিঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্যান্ডি খাওয়া উচিত না। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে চিনি রয়েছে যা ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ কঠিন করে তুলে।

ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ কি

ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ কি এ সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই চলুন তাহলে জেনে নিন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে। ডায়াবেটিস মূলত বিভিন্ন কারণেই হতে পারে। তবে তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো খাবার। আমরা ইতিমধ্যে উপরে ডায়াবেটিসের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা গুলো সম্পর্কে আলোচনা করেছি। তবে খাবার ছাড়াও আরো কিছু কারণ রয়েছে যেগুলো ডায়াবেটিস হতে সাহায্য করে। চলুন তাহলে কারণ গুলো দেখে নিন।

  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ, মানসিক দুশ্চিন্তা আপনার ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ হতে পারে।
  • প্রতিনিয়ত হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম না করা
  • সকালে নাস্তা না করা, বেশি সময় না খেয়ে অতিরিক্ত পরিশ্রম করা।
  • রাত জেগে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা
  • নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমানো
  • অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা
  • অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বা ফল গ্রহণ করা
  • অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা
  • অতিরিক্ত শুয়ে বসে থাকা

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে। তবে মূলত কোন ব্যক্তির শরীরের যদি ইনসুলিন, গ্লুকোজ, শর্করা এগুলোর ভারসাম্য ঠিক না থাকে। তবে ডায়াবেটিস দেখা দেয়। কেননা যদি কোন ব্যক্তির শর্করা ও গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় এবং ইনসুলিন নামক হরমোন কমে যায়। তবে ডায়াবেটিস দেখা দেয়। আর এগুলো সব কিছুই মূলত নির্ভর করে একটি খাদ্য অভ্যাস ও জীবন যাপনের উপর। আশা করছি বুঝতে পারছেন।

কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে

কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে চলুন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ডায়াবেটিস একটি মারাত্মক সমস্যা এ ধরনের রোগীদের নির্দিষ্ট একটি জীবন যাপনের মাধ্যমে চলতে হয়। বিশেষ করে খাবারের দিকে বিশেষ মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজন হয়। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের জেনে রাখা উচিত কি খেলে দ্রুত ডায়াবেটিস কমবে চলুন তাহলে জানুন।

টক দইঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য টক দই খুবই উপকারী। তাছাড়াও স্বাস্থ্যের জন্য এটি খুবই ভালো। ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে টক দই রক্তের চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

লেবু জাতীয় ফলঃ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে লেবু জাতীয় ফল খুবই কার্যকরী। এছাড়াও এ ধরনের ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যেমন কমলা, লেবু, জাম্বুরা ইত্যাদি।

সবুজ চাঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবুজ চা খুবই উপকারী। ইহা ইনসুলিন এর মত রক্তের কাজ করে যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য খুবই কার্যকারী।

ডিমের সাদা অংশঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডিমের সাদা অংশ পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। কেননা এ থেকে কম মাত্রায় চর্বিহীন প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

সবুজ শাকসবজিঃ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সবুজ শাকসবজি খুবই উপকারী। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবুজ শাকসবজি খুবই কার্যকারী। এটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ১৪ শতাংশ কমাতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে কম মাত্রার ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেট। এই ধরনের খাবার গুলার মধ্যে অন্যতম হলো ফুলকপি, পাতাকপি, বাঁধাকপি, পালং শাক, শালগম, লেটুস পাতা ইত্যাদি।

মটরশুটিঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মটরশুটি ওষুধের মত কাজ করে। কেননা এতে রয়েছে চর্বিহীন, প্রোটিন ও আশঁ যা রক্তের চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারঃ ডায়াবেটিস রোগীদের ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। যেমন পেয়ারা, গাজর, আপেল, নাশপাতি, স্ট্রবেরি, কলা, ব্ল্যাকবেরি, ব্লকলি, মুগ ডাল, ছোলা, মসুর ডাল, ফুলকপি, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, বীজ জাতীয় খাবার ইত্যাদি। এ ধরনের খাবার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

চিনি ছাড়া চা বা শরবতঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার খুবই বিপদজনক। তাই চিনি ছাড়া চা বা শরবত খাওয়া উচিত। এছাড়াও চা থেকে আন্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যার শরীরকে সতেজে রাখতে সাহায্য করে তাই চিনি ছাড়া চা গ্রহণ করতে পারেন।

তুলসীঃ ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য তুলসী মহা ঔষধ এর মত কাজ করে। এটি দেহে ইন্সুলিনের কাজ করে যা রক্তের গ্লুকোজের  মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

খেজুরঃ মিষ্টি জাতীয় ফল হলেও খেজুর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। কেননা এতে উচ্চ মাত্রায় ফাইবার রয়েছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সবজি

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সবজি গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। কেননা ডায়াবেটিস রোগীরা খাবারের ব্যাপারে বেশি চিন্তিত থাকেন। অনেকেই আছেন কি খাবেন বা কি খাবেন না তা বুঝে উঠতে পারেন না। কেননা খাবারের অনিয়ম হলে ডায়াবেটিস সুগার লেভেল বেড়ে যেতে পারে। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার লেভেল ঠিক রাখার জন্য। সঠিক খাদ্য বাছাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে জানুন

 চলুন তাহলে ডায়াবেটিস রোগের খাদ্য তালিকায় কি কি সবজি রাখতে পারবেন দেখে নিন।

  • কুমড়াঃ কুমড়াতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। কুমড়া বা কুমড়ার বীজ দুটোই অনেক উপকারী।
  • পালং শাকঃ পালং শাক এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফাইবার, প্রোটিন ও আরো অনেক পুষ্টি উপাদান। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়াও পালংশাক এ থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ঢেঁড়সঃ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পলিস্যাকারাইড ও ফ্ল্যাগনয়েড ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।
  • টমেটোঃ ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য টমেটো অনেক উপকারী। এতে রয়েছে লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • বাঁধাকপিঃ বাঁধাকপি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়াও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এটি সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
  • করলাঃ এতে রয়েছে ক্যারাটিন ও পলিপেপ্টাইড-পি যা ইন্সুলিনের মত কাজ করে এছাড়াও রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এটি খেতে তিতা হলেও, এটি খেতে খুব মজাদার।
  • শসাঃ শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে এছাড়াও এটি শরীরকে সতেজ রাখে।
  • ব্লকলিঃ এটি বিদেশি সবজি হলেও আমাদের দেশের জনপ্রিয়তা ব্যাপক। তাছাড়াও এতে রয়েছে সাল্লু ফোড়া ফ্যান নামক উপাদান যা ডায়বেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী এছাড়াও এটি হজম শক্তির জন্য দারুন কাজ করে
  • লাউঃ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার যা শর্করার মাত্রা কমায় শরীরকে ঠান্ডা রাখে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লাউ দারুন কাজ করে।
  • মূলাঃ এই সবজি অনেকেই পছন্দ করেন না। আবার অনেকেরই প্রিয় একটি সবজি। তাছাড়াও এতে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন সি যা রক্তচাপ কমায় রক্তের শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে রাখতে সাহায্য করে।
  • ক্যাপসিকামঃ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও ফাইবার ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারী। তাছাড়াও শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • মেথি শাকঃ এতে রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান ও ফাইবার যা রক্তের শর্করা কমাতে সহায়তা করে এবং এটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী।
  • রসুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। এটি ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে। রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও এটি ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি।
  • কাঁচা পেঁপেঃ ডায়াবেটিস রোগের জন্য এটি অনেক উপকারী। এতে রয়েছে ফাইবার যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা ফল

ডায়াবেটিসের রোগীর খাদ্য তালিকা ফল গুলো সম্পর্কে জেনে নিন। আমরা ইতিমধ্যে ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত উপরে আলোচনা করে আসছি। বর্তমানে মূলত ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। ডায়াবেটিসের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এটি  চিরতরে দূর হয় না। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা চাইলেই ইচ্ছামত চলতে বা কোন খাবার গ্রহণ করতে পারে না।

বিশেষ করে মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হয়। তাছাড়াও নির্দিষ্ট খাবারগুলো  নিয়মিত খেতে হয়। তবে খাবারের মধ্যে আপনারা অনেকেই জানতে চান কি কি ফল ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবে চলুন তাহলে জেনে নিন।

  • তরমুজঃ ডায়াবেটিস রোগীরা তরমুজ খেতে পারবে। তবে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না কেননা এতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ চিনি। এজন্য অল্প পরিমাণে খেতে পারবেন।
  • আমঃ আম আমাদের সবারই খুবই পছন্দের একটি ফল। চাইলে ডায়াবেটিস রোগীরাও আম খেতে পারবে। তবে সারাদিনে একটি মাত্র আম খেতে পারবে।
  • জামঃ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি অনেক উপকারী একটি ফল। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • কাঁঠালঃ পাকা কাঁঠাল স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তবে ডায়াবেটিসের রোগীরা দিনে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনটি বা চারটি কাঁঠালের কোষ খেতে পারবেন। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে সুগার থাকে তাই বেশি পরিমাণে না খাওয়ায় উত্তম।
  • লিচুঃ অনেক মজাদার একটি ফল লিচু। তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চার থেকে পাঁচটি লিচু দিনে খেতে পারবেন। লিচুতেও সুগার থাকে তাই অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।
  • বেদেনাঃ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রতিদিন অল্প পরিমাণে বেদেনা চাইলে খেতে পারেন। কেননা এতে রয়েছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রী রেডিক্যাল বিরুদ্ধে কাজ করে।
  • আপেলঃ ডায়াবেটিস রোগীরা চাইলে প্রতিদিন একটি করে আপেল খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত খাবেন না এতে বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
  • কামরাঙ্গাঃ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ফাইবার রয়েছে যা ডায়বেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারী। চাইলে এ ধরনের ফল গুলো খেতে পারেন।
  • পেঁপেঃ এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা চাইলে প্রতিদিন পরিমিত পেঁপে খেতে পারেন।
  • কমলাঃ এতে রয়েছে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফাইবার যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা প্রতিদিন একটি করে চাইলে কমলা খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীর সকালের খাবার

ডায়াবেটিস রোগীদের অন্যান্য বিষয়ের থেকে খাদ্য অভ্যাসের দিকে নজর দেওয়া বিশেষ জরুরী হয়ে পড়ে। কেননা খাদ্য অভ্যাসের উপর নির্ভর করে দেহের শর্করার মাত্রা। এজন্য সঠিক খাদ্য অভ্যাস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যা অভ্যাসে ভুল হলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। 

একজন ডায়াবেটিস রোগীর সুস্থতা নির্ভর করে অনেকটাই তার খাদ্য অভ্যাসের উপর। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের সকালের নাস্তায় রঙ্গিন শাকসবজি, ফলমূল রাখা উচিত। এগুলোতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারী। তাছাড়াও ফায়বার সমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত, এগুলো হজম শক্তি বাড়ায়। কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। 

ডায়াবেটিসে মুড়ি খাওয়া যাবে কি

ডায়াবেটিসে মুড়ি খাওয়া যাবে কিনা এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। মূলত ডায়াবেটিস এমন একটি সমস্যা যা নিয়ে অনেকেই খুবই আতঙ্কে থাকেন। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়া বিষয়গুলো নিয়ে। এটি এমন একটি সমস্যা যা খুবই সতর্কতার সাথে মেনে চলতে হয়। তবে অনেক ডায়াবেটিস রোগী আছেন যাদের মুড়ি খাওয়া নিয়ে সঠিক ধারণা নেই।

তাদের আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব ডায়াবেটিসের আক্রান্ত ব্যক্তিরা মুড়ি খেতে পারবে কিনা বা কতটুকু মুড়ি খেতে পারবে, এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত চলুন তাহলে জেনে নিন। মূলত ডায়াবেটিসের আক্রান্ত ব্যক্তিরা মুড়ি খেতে পারবে। তবে অল্প পরিমানে কেননা প্রতি ১০০ গ্রাম মুড়িতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার। 

এর মধ্যে কার্বোহাইড্রেটের  পরিমান ৯০ গ্রাম এবং ফাইবারের পরিমাণ ২ গ্রাম যা রক্তে শর্করা মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও মুড়িতে রয়েছে গ্লাইসমিক যার জন্য ডায়াবেটিস রোগীরা মুড়ি খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এজন্য ডায়বেটিস রোগীরা মুড়ি খেতে পারবে তবে অল্প পরিমাণ।

ডায়াবেটিসে চিড়া খাওয়া যাবে কি

ডায়াবেটিসে চিড়া খাওয়া যাবে কি এটি অনেকেই জানতে চান চলুন তাহলে জেনে নিন। চিড়াতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোলেস্টেরল রোগীদের জন্য খুবই কার্যকরী একটি খাবার। এটি রক্তের কোলেস্টেরনের মাত্রা কমাতে দারুন কাজ করে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিড়া খুব একটা উপকারী না। অতিরিক্ত চিড়া গ্রহণের ফলে ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

এজন্য একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য প্রতিদিন ২৫ গ্রাম চিড়া গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়াও চিড়া খেলে ডায়াবেটিস বাড়বে কিনা এটিও অনেকটা নির্ভর করে। আপনি চিড়া কিভাবে খাচ্ছেন তার উপর। অনেকেই আছেন চিড়ার সাথে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি খাবার যুক্ত করে খায়। তবে ডায়াবেটিসের রোগীরা এগুলো এড়িয়ে চলবেন।

শেষ কথাঃ ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা গুলো আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। সেই সাথে আরো জানিয়েছি ডায়াবেটিস রোগীদের কোন কোন ফল, সবজি খাওয়া যাবে বা ডায়াবেটিস হলে মুড়ি, চিড়া খাওয়া যাবে কিনা সহ আরো অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জানানোর চেষ্টা করেছি। বর্তমানে ডায়াবেটিস সমস্যা ঘরে ঘরে।

এগুলোর মূলত শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিকস দেখা যায়। প্রিয় পাঠক ডায়াবেটিস দেখা দিলে তা সম্পূর্ণভাবে দূর করা সম্ভব না। তবে প্রতিদিনের জীবনযাপন, সঠিক খাদ্য অভ্যাস এর মাধ্যমে এবং ডক্টরের সঠিক পরামর্শ চিকিৎসার মাধ্যমে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের রাখা যায়। টাইম ডায়াবেটিস ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করতে সঠিক খাদ্য অভ্যাস গড়ে তুলুন



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লানিং টিপস ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url