প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় জানুন
প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। বিশেষ করে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ভুলছেন যারা তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি উপকারে আসবে। দ্রত ওজন কমানো, ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর, মেয়েদের দ্রত ওজন কমানো সহ
আরও ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়, লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়, ৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়, ওজন কমানোর খাবার তালিকা সহ প্রয়োজনীয় আরও বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
- প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
- ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়
- মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
- লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়
- ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়
- পানি খেয়ে ওজন কমানোর উপায়
- কত ক্যালরিতে ১ কেজি ওজন বাড়ে
- ওজন কমানোর খাবার তালিকা
- ৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়
- শেষ কথাঃ প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। অনেকেই আছেন যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন। দ্রুত ওজন কমানোর কথা ভাবছেন। তবে আপনি চাইলে দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন। কিন্তু স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন কমাতে চাইলে একটু সময় এর প্রয়োজন। এ ছাড়া দ্রুত ওজন কমাতে নিয়মিত কিছু নিয়ম-নীতি, ডায়েট চার্ট, ব্যায়াম, খাদ্য তালিকা ও জীবনযাপনের কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।
সাধারণত ওজন বৃদ্ধি বা ওজন কমানো সবকিছু নির্ভর করে। আপনার প্রতিদিনের জীবন যাপনের রুটিনের উপর। চলুন তাহলে প্রতিদিন এক কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে জানুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করাঃ দ্রুত ওজন কমানোর জন্য পানি অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন বিষাক্ত টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। শর্করা নিয়ন্ত্রণের পানি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়াও ক্ষতিকর পদার্থগুলো শরীর থেকে বের করে প্রসাবের মাধ্যমে। যার ফলে শরীর সুস্থ থাকে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও পানি খেলে পেট ভরা থাকে ফলে অন্য খাবার খাওয়া প্রবণতা কমে।
শশাঃ শশা খাওয়া কার্যকারিতা আমরা সবাই জানি। আমাদের শরীরের জন্য বা চর্বি কমানোর জন্য শসা ব্যাপক ভূমিকা রাখে। শসা আমাদের শরীরের রূপচর্চা থেকে শুরু করে শরীর চর্চা পর্যন্ত সব জায়গায় ব্যবহৃত হয়। শসা খেলে খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ থাকে ক্ষুধা দূর হয় এবং শরীরকে অ্যালকালাইন মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। তাছাড়াও শশা ফ্যাট দূর করতে সাহায্য করে।
গ্রিন টিঃ গ্রিন টি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শরীরের ওজন কমাতে গ্রিন টি ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। গ্রিন টি পরিপাকতন্ত্রের জমানো ক্ষতিকর খাদ্যবস্তু শরীর থেকে দূর করতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি চর্বি বা মেদ কমাতে সহায়তা করে। তাই আপনি চাইলে প্রতিদিন গ্রিন টি পান করতে পারেন এটি খুবই উপকারী।
শাক-সবজি ও ফলঃ শাকসবজি ও ফল খাওয়া শরীরের ওজন কমানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যে গুলোতে প্রোটিনের মাত্রা কম থাকে সেইগুলো। তাই শাকসবজি ও ফল আপনি ওজন কমাতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত খাদ্যগুলো পরিহার করবেন। এতে দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
খাবার নিয়ন্ত্রণঃ মূলত শরীরের ওজন অনেকটাই নির্ভর করে খাদ্যের উপর। তাই সঠিক পরিমাণ খাবার গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওজন কমানোর জন্য কোন কোন খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। সে খাবার গুলো বাছাই করুন এবং যে খাবার গুলো খেলে ওজন বৃদ্ধি পাবে। সেগুলো পরিহার করুন। বাইরের র্ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া, বিভিন্ন মিষ্টি, দুগ্ধ জাতীয় ও অ্যালকোহল পানীয় বর্জন করুন।
৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়
৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে এবার চলুন জেনে নিন। বর্তমানে ওজন বৃদ্ধি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই এখন অস্বাভাবিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভুগছেন। দ্রুত কিভাবে ওজন কমানো যায় সেজন্য চেষ্টা করছেন। সাত দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম-নীতি ও ডায়েট চার্ট ফলো করতে হবে। তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত কম সময়ে ওজন কমাতে গিয়ে শরীরের সমস্যা হতে পারে।
এছাড়াও অল্প সময়ে ওজন কমানো খুবই কষ্টকর কাজ। প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে আপনাকে। তবে ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমাতে পারবেন। তাহলে দেখে নিন নিয়মিত ব্যায়াম, খাওয়া দাওয়া, ঘুম এর প্রয়োজন ওজন কমানোর জন্য। কিন্তু প্রতিদিনের কর্ম ব্যস্ততায় নিজেদেরকে সময় দেওয়ার মতো সময় থাকে না। তার পরেও অতিরিক্ত অস্বাভাবিক ওজন থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে।
শারীরিক ব্যায়ামঃ ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর জন্য সর্ব ফাস্ট আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তার মধ্যে প্রথমত হলো শারীরিক ব্যায়াম। পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে শরীর চর্চা করে যেতে হবে। এছাড়াও ব্যায়াম ওজন কমানোর পাশাপাশি আপনার শরীর কেউ সুস্থ রাখতে সাহায্য করবেন।
প্রতিদিন কমপক্ষে আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা হাটাহাটি করার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও সাঁতার কাটা, দড়াদড়ি করা, সাইকেল চালানো, হাটাহাটি করা এগুলো নিয়মিত করতে পারেন। শরীর চর্চা করার জন্য বেছে নিতে পারেন যেকোন ফাকা জায়গা।আবার চাইলে ঘরে বসেও এই কাজগুলো করতে পারেন প্রতিদিন নিয়মিত সকাল বিকেল এই কাজ গুলো করার মাধ্যমে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব।
চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করুনঃ দ্রুত সময়ে ওজন কমানোর জন্য খাবারের দিকে মনোযোগী হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফ্যাটি জাতীয় খাবার বা চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করুন। বাহিরের খাওয়া-দাওয়া পরিহার করুন। ঘরের তৈরি সুষম খাবার গ্রহণ করুন। অতিরিক্ত প্রোটিন জাতীয় খাবার না খাওয়াই উত্তম। অতিরিক্ত উচ্চ ক্যালোরি খাবার পরিহার করুন। এগুলো দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুনঃ অল্প সময়ে ওজন কমাতে গিয়ে অনেক পরিশ্রম করার প্রয়োজন হয়। যার জন্য শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। তাই প্রতিদিনের শরীরচর্চার পাশাপাশি বা বিভিন্ন কার্যকলাপের পাশাপাশি অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। পুষ্টির ঘাতটি পূরণ করার জন্য সিদ্ধ খাবার গুলো খেতে পারেন। শাকসবজি খেতে পারেন। কম মসলাযুক্ত খাবারগুলো খেতে পারেন।
চাপমুক্ত থাকুনঃ শরীরের ওজন কমানোর জন্য চাপমুক্ত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অতিরিক্ত মানসিক টেনশন বা দুশ্চিন্তা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমানোর জন্য অবশ্যই মানুষের চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও এটি আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
ঘুমঃ ওজন কমানোর জন্য ঘুমের কোন বিকল্প নেই। অতিরিক্ত রাত জাগা পরিহার করুন। যত দ্রুত সম্ভব দিনের কাজ শেষ করে রাতে ঘুমিয়ে পড়ুন। অতিরিক্ত রাত জাগার কারণে শরীর খারাপ হয় পাশাপাশি ক্ষুদা লাগে। যার কারণে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। যা ওজন বাড়তে সাহায্য করে। তাই দ্রুত ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং অনেক সকালে ঘুম থেকে উঠুন।
সালাদঃ শরীরের ওজন কমাতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সালাদ রাখুন। এটি আপনার ওজন কমাতে খুবই সাহায্য করবেন। তাছাড়াও বিভিন্ন রকমের সবজি, টক, দই এবং অ্যাভোকাডো মিশিয়ে খেতে পারেন।
লেবু জলঃ দ্রুত ওজন কমানোর জন্য সকালে খালি পেটে প্রতিদিন উষ্ণ গরম পানির সাথে লেবু জল খেতে পারেন। চাইলে একটু মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি আপনার শরীরের চর্বি বা মেদ দূর করতে সাহায্য করবে। তাছাড়াও আপনার এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করবে।
চিনি যুক্ত খাবারঃ চিনি যুক্ত খাবার পরিহার করুন। উচ্চ ক্যালরি বা চিনিযুক্ত খাবার পরিহার করুন। এটি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। চায়ের সাথে চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
হালকা খাবারঃ দ্রুত ওজন কমানোর জন্য হালকা খাবার গ্রহণ করুন। দুপুরের আগে এগারোটা বা বারোটা এর মধ্যে কিছু হালকা খাবার খেয়ে নিতে পারেন। এর ফলে দুপুরে অতিরিক্ত ক্ষুধা ভাব দূর হবে যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করুনঃ প্রতিদিনের ব্যস্ততার মধ্যে চেষ্টা করুন স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করার। কেননা এটি আপনার শরীরের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। তাই স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন, সুস্থ শরীর ও ওজন কমানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও সকল প্রকার বাজে অভ্যাসগুলো পরিহার করুন।
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো চলুন এবার জেনে নিন। বাড়তি ওজন মেয়েদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর ব্যাপার। কেননা সারাদিনের কর্মব্যস্ততা ও পারিবারিক চাপ এর কারণে মেয়েদের নিজেদের যত্ন নেওয়া অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তারপরেও সঠিক কিছু নিয়ম ফলো করলে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। মূলত ওজন বাড়ে অনিয়ন্ত্রিত খাবার, অনিয়মিত ঘুম ও অস্বাভাবিক জীবন যাপন এগুলার কারণে।
তাই আপনি যদি এগুলো প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেন। তবেই ওজন কমানো সম্ভব। মেয়েদের ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো খাবার নিয়ন্ত্রণ।কেননা মেয়েরা বাহিরের খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে। অনেকেই আছেন যারা কম খেয়েও ওজন কমাতে পারেন না। প্রকৃতপক্ষে খাবার কম গ্রহনের থেকেও, বেশি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাণ টা।
কোন সময় কোন খাবারটা গ্রহণ করছেন এটা জানা খুবই জরুরী। সঠিক গুণ বা পুষ্টির মাত্রা দেখে খাবার গ্রহণ করা উচিত। অনেক সময় দ্রুত ওজন কমাতে গিয়ে শারীরিক দুর্বলতায় পড়েন অনেকেই। সেদিকে নজর রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মূলত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার প্রতিনিয়ন গড়ে ২২০০ কিলো ক্যালরি গ্রহণের প্রয়োজন হয়। অনেকেই আছেন অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করে
এবং সে অনুযায়ী শারীরিক পরিশ্রম তেমন করে না। যার ফলে অতিরিক্ত ওজন বাড়ে। তবে দ্রুত ওজন কমানোর জন্য শর্করা জাতীয় খাদ্যগুলো কম খাবেন। যেমন পরোটা, রুটি ভাত ইত্যাদি। চিনি যুক্ত খাবার গুলো বর্জন করবেন। যেমন চকলেট, বিভিন্ন আইসক্রিম ইত্যাদি। বিভিন্ন ফাস্টফুড টাইপের খাবার গুলো বর্জন করবেন। যেমন চিকেন ফ্রাই, বার্গার ইত্যাদি। ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করবেন।
টক ফল বা ভিটামিন সি যুক্ত খাবার করবেন যেমন কাঁচা আম, লেবু, আমরা ইত্যাদি। অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার গুলো বর্জন করবেন যেমন পাকা কলা, পাকা আম ইত্যাদি। পরিমাণে কম খাবেন। চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করবেন যেমন ভাজাপোড়া, চর্বিযুক্ত বিভিন্ন মাংস ইত্যাদি। নিয়মিত শরীর চর্চা করার চেষ্টা করবেন। সারা দিনের কাজগুলো নিজে করার চেষ্টা করবেন। পর্যাপ্ত পরিমাণে হাঁটাহাঁটি করার চেষ্টা করবেন।
লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়
লেবু নিয়ে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বা অতিরিক্ত ফ্যাট দূর করতে লেবু অনেক কার্যকরী। এছাড়াও লেবু আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করে থাকে। ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করবেন লেবু। অনেকেই আছেন ওজন কমানোর জন্য লেবু খেয়ে থাকেন।
চাইলে আপনিও ওজন কমানোর জন্য লেবু খেতে পারেন। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানি ও লেবু খেতে পারেন। তাছাড়াও লেবু, পানি ও মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। ভালো ফলাফলের জন্য সকালে খালি পেটে লেবু পানিটা খেতে পারেন। এটা আপনার ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করবে। এক গ্লাস পানি নিয়ে তাতে প্রয়োজন মতো লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
এটি আপনার শরীরের থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর টক্সিং বের করতেও সাহায্য করে। এছাড়াও দেহের বিপাকীয় হার বাড়ায় যার ফলে ওজন কমে। আপনি নিয়মিত এটি গ্রহন করতে পারেন ফ্যাট কমাতে। তাছাড়াও অন্যান্য খাবারের সাথেও লেবু খেতে পারেন।
ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়
ব্যায়াম করে ওজন কমানো উপায় গুলো সম্পর্কে এবার চলুন বিস্তারিত জেনে নিন। অনেকেই আছেন সারা দিনে ব্যস্ততায় ব্যায়াম করার সময় হয়ে ওঠে না। কিন্তু শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে বেশ চিন্তায় আছেন। তারা চাইলে ব্যায়াম না করেও খুব সহজে ওজন কমাতে পারেন। শরীরের অস্বাভাবিক ওজন অনেক রকম সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই সমস্যা দূর করতে পারেন। তবে সঠিক ডায়েট চার্ট গ্রহণ করবেন।
এর মধ্যে প্রধান হলো প্রতিদিনের লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা। সঠিক নিয়ম অনুযায়ী জীবন যাপন করা। এজন্য প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। তারপর খালি পেটে লেবু জল, চিয়া সিড বা মেথি ও মধু বা কালোজিরা খেতে পারেন। এগুলো আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি আপনার ওজন কমাতেও ব্যাপক সাহায্য করবে। তারপর নিয়ম করে হাটাহাটি করুন। শরীর চর্চার ওজন কমাতে কোন বিকল্প নেই।
তাছাড়াও প্রতিদিনের ব্যায়াম এর পাশাপাশি সঠিক পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার ও কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার পরিহার করুন। বেশি বেশি সালাদ গ্রহণ করুন। পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করুন। অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার গুলো পরিহার করুন। নিয়ম করে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমান। এত শরীর ভালো থাকবে। তাছাড়াও অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
পানি খেয়ে ওজন কমানোর উপায়
পানি খেয়ে ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। অবাক হচ্ছেন পানি খেয়ে কিভাবে ওজন কমানো যায়। হ্যাঁ পানি খেয়েও ওজন কমানো যায়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার সাথে পানিও আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার সাথে ওজন কমানোর জন্য। যেকোন অন্য খাবার গ্রহনের আগে পানি পান করলে, খাবার বেশি খাওয়ার প্রবণতা কমে যার ফলে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি হতে পারে না।
এছাড়াও পানি আমাদের শরীরের ক্ষতিকার টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং শরীর কে সুস্থ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও পর্যাপ্ত পানি গ্রহনে শরীর হাইড্রেশন থাকে। তাই খাবার খাওয়ার ১০ মিনিট আগে বা পরে পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। এটি শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে খাবার খাওয়ার পর অতিরিক্ত পানি না খাওয়ায় উত্তম।
কত ক্যালরিতে ১ কেজি ওজন বাড়ে
কত ক্যালরিতে ১ কেজি ওজন বাড়ে তা জেনে নিন। আসলে আমাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ক্যালরির পরিমাণ টা ঠিক রাখা খুবই জরুরি। কেননা শরীরের ওজন বাড়ানো বা কমানো দুই ক্ষেত্রে ক্যালরির পরিমাণ জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি শরীরের ওজন বাড়াতে চান তবে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়ানো লাগবে।অর্থাৎ ক্যালোরি যুক্ত খাবার গ্রহন করতে হবে।
সাধারণ দিনে যে খাবার গ্রহন করেন তার থেকে ৫০০ বা ১০০০ ক্যালোরি যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন করতে হবে। তাছাড়াও আপনার প্রতিদিনের প্ররিশ্রম ও খাদ্যের উপর নির্ভর করে শরীরে ক্যালরি বজায় থাকবে।সব কিছু মিলিয়ে প্রতিদিন নিয়ম করে খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে ১ বা ২ সপ্তাহ শেষে আপনার ওজন ১ কেজি পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে। অর্থাৎ আপনার দেহের ওজন ১ কেজি বাড়াত নূন্যতম ৭০০০ পর্যন্ত ক্যালরি প্রয়োজন হবে।
ওজন কমানোর খাবার তালিকা
ওজন কমানোর খাবার তালিকা গুলো চলুন এবার দেখে নিন। প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত ওজন সত্যি অনেক বিরক্তিকর। তাছাড়াও শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায় এই অতিরিক্ত ওজনের কারণে। ইচ্ছে মতো পোশাক পরিধান করা যায় না। এছাড়াও আরও অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে এই অতিরিক্ত ওজন। তাই ওজন কমানোর প্রধান বিষয় হলো খাদ্য। তাই আপনার খাবারের মান সঠিক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ওজন কমানোর খাবার তালিকা গুলো দেখে নিন। ওজন কমানোর জন্য এই ডায়েট চার্ট ফলো করতে পারেন।
কার্বোহাইড্রেট
- বিভিন্ন শাকসবজি যেমনঃ পালংশাক, শশা, গাজর, টমেটো, লাল শাক ইত্যাদি।
- ফল যেমনঃ আপেল, পেঁপে, কলা,জাম্বুরা ইত্যাদি।
- বাদামী ভাত
- ওটমিল
প্রোটিন
- বিভিন্ন বিজ যেমনঃ চিয়া বিজ, সূর্যমুখি বিজ, তিসি বিজ ইত্যাদি।
- বিভিন্ন ডাল যেমনঃ মটরশুঁটির ডাল,মসুর ডাল ইত্যাদি।
- বিভিন্ন মাছ যেমনঃ রুই, কাতলা, ইলিশ, তেলাপিয়া ইত্যাদি।
- বিভিন্ন বাদাম যেমনঃ আখরোট, পেস্তা, কাজুবাদাম ইত্যাদি।
- মুরগির বুকের মাংস
- ডিম
- ছোলা
চর্বি যুক্ত খাদ্য
- অ্যাভোকাডো
- নারিকেল তেল
- জলপাই তেল
- বাদামি বিজ যেমনঃ পেস্তা বাদাম, আখরোট ইত্যাদি
- পানিয় খাদ্য
- গ্রিন টি
পর্যাপ্ত পানি
শাকসবজি ও ফলের রস অবশ্যই চিনি মুক্ত
খাবারের রুটিন
সকালের নাস্তাঃ
- ডিমের অমলেট
- ডাল- ভাত ও এক টুকরো লেবু
- ফল ও ওটমিল বাদাম
দুপুরের খাবারঃ
- মাছের ঝোল ও ভাত
- মুরগির মাংসের রেসিপি ও রুটি
- ডাল, ভাত ও শাক
মধ্যবতী খাবার
- ফল
- বীজ
- দই
- বাদাম
রাতের খাবার
- ডাল- ভাত
- শাকসবজি ও সালাদ
- মুরগির বুকের মাংস
প্রয়োজনীয় কিছু টিপস
- প্রতিদিনে অল্প অল্প করে খাবার খান কমপক্ষে
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
- নিয়মিত ঘুমান
- বাহিরে অতিরিক্ত তেলে ভাজাপোড়া ও অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন।
- মানসিক চাপ মুক্ত থাকুন
- ধৈর্য ধরুন, নিজেকে সময় দিন।
- নিয়মিত শরীরচর্চা ও ব্যায়াম করুন
৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়
৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। আমরা ইতিমধ্যে উপরে প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে আসছি। অতিরিক্ত ওজন শরীরের বিভিন্ন সমস্যার কারণ হয়ে দাড়ায়। তাছাড়াও বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। সুস্থ স্বাভাবিক শরীর সবারই কাম্য। কম বেশি সবাই চাই নিজের ফিট রাখতে ও সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করতে।
তাই অতিরিক্ত ওজন কম সময়ে কিভাবে কমানো যায় সেই চেষ্টা অনেকেই করে। ওজন কমাতে প্রতিদিন আপনাকে পর্যাপ্ত ক্যালোরি বার্ন করতে হবে। এছাড়াও ৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর জন্য আপনাকে প্রতি সপ্তাহে ৩৫০০ ক্যালোরি ঘাটতি রাখতে হবে। তাছাড়াও প্রতিদিন ৫০০ ক্যালোরি ঘাটতি রাখা লাগবে। যার ফলে ক্যালরির পরিমাণ হ্রাস করে শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
শেষ কথাঃ প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি। সাথে মেয়েদের দ্রত ওজন কমানোর উপায়, ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়, লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়, ৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায় সহ আরও অনেক বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা যারা ওজন নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি উপকারে আসবে।
তাই প্রতিদিনের কর্মব্যাস্ততার ফাঁকে সঠিক ডায়েট চার্ট তৈরি করে জীবন যাপন এর অভ্যাস পরিবর্তন করুন। ধৈর্য্য ধরে পরিশ্রম করুন দেখবেন দ্রত ওজন কমে গেছে। তাছাড়াও খাদ্য অভ্যাস সঠিক রাখুন। মানসিক চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। এগুলো শরীরের ওপর অনেক প্রভাব ফেলে যার কারণে বিভিন্ন সমস্যা ও ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। প্রিয় পাঠক আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
লানিং টিপস ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url