থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস জানুন
থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। আজকে আমরা আর্টিকেলের মাধ্যমে সঠিক তথ্য বা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এছাড়াও থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট এর উৎপত্তি কিভাবে এবং থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করা হারাম কিনা সহ
থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে ইসলাম কি বলে, থার্টি ফার্স্ট নাইটের সর্তকতা হওয়া উচিত কিনা এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব আজকের আর্টিকেলে। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস
- থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস
- থার্টি ফাস্ট নাইট কি
- থার্টি ফাস্ট নাইট অর্থ কি
- থার্টি ফাস্ট নাইটের উৎপত্তি
- থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে
- থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে ইসলাম কি বলে
- থার্টি ফার্স্ট নাইট হালাল নাকি হারাম
- থার্টি ফার্স্ট নাইটের সামাজিক ক্ষতি
- থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে সর্তকতা
- নতুন বছরে আমাদের করণীয়
- শেষ কথাঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস
থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস
থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিন। বর্তমানে থার্টি ফার্স্ট নাইট একটি জনপ্রিয় ও উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। মূলত নতুন বছরের প্রথম দিনটিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট হিসেবে উদযাপন করা হয়। থার্টি ফার্স্ট নাইট ইংরেজি শব্দ। ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করার উদ্দেশ্যে মূলত এই দিনটি পালন করা হয়। তাছাড়াও এ দিনটি উদযাপন করার আরো কিছু কারণ রয়েছে।
তা হল ঈসা(সাঃ) জন্মের ৪৬ বছর পূর্বে কিছু রোমান মুশরিকরা এক ঈশ্বরের ইবাদত করত। তাকেই তারা স্রষ্টা হিসেবে মনে করত বা বিশ্বাস করতো। তারা মূলত অনেক গুলো সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী ছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল janus নামের এক ঈশ্বর। তারা মনে করত এই ঈশ্বরটি তাদের অতীত ভবিষ্যৎ এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে।আর এই ভাবনা থেকে তারা এ জানোস নামের ঈশ্বর কে,
খুশি করার জন্য এই দিনটি উদযাপন করে থাকেন। তারা মনে করেন এই দিনটি উদযাপনের মাধ্যমে তাদের মঙ্গল রয়েছে।, এছাড়াও জানুস নাম অনুযায়ী বছরের প্রথম মাসের তারা নাম দেন জানুয়ারি। তারা এতটাই এই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতেন যা আমাদের ইসলাম ধর্ম সামর্থ্য করে না। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী এটি একটি শিরক। কেননা আল্লাহ এক অদ্বিতীয় আমরা এক আল্লাহর বিশ্বাসী। অনেক মুসলিম ভাই-বোনেরা এ বিষয়গুলো না জেনেই,
থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করে থাকেন। অনেকেই হয়তো এখনো জানেন না এ দিনটি কেন উদযাপন করা হয়। কেন এত আনন্দ উল্লাস করা হয়, কি রহস্য রয়েছে। মূলত প্রতিটা দিনের মতনই থার্টি ফার্স্ট এই দিনটি স্বাভাবিক একটি দিন।প্রতিটা দিনই আমরা চাইলে সুন্দর ভাবে কাটাইতে পারি। এছাড়াও শুধুমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালা জানেন। আমাদের ভবিষ্যৎ কি ঘটবে, না ঘটবে তাই এগুলো নিয়ে অন্ধ বিশ্বাস না রাখায় উত্তম।
থার্টি ফাস্ট নাইট কি
থার্টি ফার্স্ট নাইট কি এ সম্পর্কে এবার বিস্তারিত জেনে নিন।থার্টি ফার্স্ট নাইট হলো মূলত পহেলা জানুয়ারি প্রথম প্রহর। এছাড়াও খ্রিস্টীয় ও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মতে ৩১ এ ডিসেম্বর দিবাগত রাত। মূলত সারা বিশ্বে এ দিনটি উদযাপন করা হয় ব্যাপক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে এই দিনটি উদযাপন করা হয়। ৩১ এ ডিসেম্বরের রাত বারোটার পর থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের উৎসব।
মূলত নতুন বছরকে উৎসবমুখর এর মাধ্যমে বরণ করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রকমের আয়োজন করা হয়।দারুন দারুন আতশবাজি, লাইটিং, রং, নাচ, গান বিভিন্ন খাওয়া দাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে পালিত হয় থার্টিফার্স্ট। বাহিরের দেশ গুলোতে আগে থেকেই সুসজ্জিত করে রাখে। এই দিনটি উদযাপন করার জন্য প্রচুর পরিমাণে আনন্দ উল্লাস করে থাকে তারা। তবে এই দিনটি অন্যান্য দেশে অনেক জাঁকজমক ভাবে পালিত হলেও
অনেক মুসলমান রাষ্ট্রের এই দিনটি পালন করা হয় না।এছাড়াও অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবেও এ দিনটি তেমন পালন করেন না। বিশেষ করে সৌদি আরব, আফগানিস্তান, নেপাল, ইসরাইল ইত্যাদি এই দেশগুলো থার্টি ফার্স্ট পালন করেন না।বিভিন্ন জন বিভিন্ন জ্ঞান থেকে এ দিনটি উদযাপন করে থাকেন। তবে অনেকেই নতুন বছরকে বরণ করার উদ্দেশ্যেই এই দিনটি পালন করে থাকেন।
বিশেষ করে বর্তমানে তরুণ তরুণীরা খুবই আনন্দ উল্লাসের সাথে এ দিনটি পালন করে থাকেন। তারা মনে করেন নতুন আরেকটি বছর নতুন ভাবে শুরু করলে, হয়তো পুরো বছর টাই তাদের জন্য আনন্দময় কাটবে। থার্টিফার্স্ট নাইটের ইতিহাস অনুযায়ী ১৯৫২ সাল থেকেই ইংরেজি নববর্ষ চালু হয় এবং তারপর থেকেই ইংরেজি নববর্ষ থার্টি ফাস্ট নাইট প্রচলিত হয়ে আসছে। যাকে সবাই হ্যাপি নিউ ইয়ার বলে উদযাপন করেন।
থার্টি ফাস্ট নাইট অর্থ কি
থার্টি ফার্স্ট নাইট অর্থ কি চলুন এবার এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। মূলত থার্টি ফার্স্ট নাইট একটি ইংরেজি শব্দ যার অর্থ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, থার্টি অর্থ ৩০ আর ফাস্ট অর্থ প্রথম আর নাইট অর্থ রাত অর্থাৎ থার্টি ফার্স্ট নাইট এর পরিপূর্ণ অর্থ দাঁড়ায় ৩১শে ডিসেম্বরের দিবাগত রাত যা বারোটা এক মিনিটে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরণ করা হয়।
এই রাতটি মূলত খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পালন করা হয়ে থাকে। তাছাড়াও ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করার উদ্দেশ্যে পুরো বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জাঁকজমক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করা হয়। অনেকেই পুরনো দিনের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট ভুলে নতুন বছরে নতুন ভাবে নিজেকে সাজানোর জন্য উৎসবমুখর আয়োজনের মাধ্যমে এই উৎসবটি পালন করে থাকেন।
থার্টি ফাস্ট নাইটের উৎপত্তি
থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎপত্তি সম্পর্কে এবার আলোচনা করব ১৯৫২ সালে গ্রাগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর পহেলা জানুয়ারিকে নববর্ষের দিন হিসেবে পালন করা হয়। মূলত সম্রাট জমসিদ খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ সালে এই নববর্ষ উৎসব প্রবর্তন করে থাকেন। পরবর্তীতে ব্যাবিলনের সম্রাট জুলিয়াস সিজার ৪৬ সালে এই ইংরেজি নববর্ষ প্রচলন করে থাকেন।
নববর্ষ পালনের প্রথম দিকে বিভিন্ন তারিখের এটি পালন করা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে এটি পহেলা জানুয়ারি করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের ২০০ সালে ৩১ ডিসেম্বর থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করার প্রচলন ঘটে। তাছাড়াও বিভিন্ন রকমের আচার অনুষ্ঠান পালন করা হয় পুরা বিশ্বব্যাপী যেমন
আতশবাজি ও পটকাবাজিঃ থার্টি ফাস্ট নাইট কে ঘিরে পুরো বিশ্বে আকাশে আতশবাজি ও পটকা বাজি চলে। ব্যাপক আনন্দ উল্লাস উপভোগ এর জন্য মধ্যরাত থেকেই এসব আয়োজন শুরু হয়ে যায়। যা অনেকেই বিরক্ত বোধ করে বা জন সাধারণের জন্য অনেকটাই কষ্টদায়ক হয়ে যায়। চারিদিকে ব্যাপক শব্দ আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি হয়। কোন কোন জায়গাতে আবার বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে এগুলোর জন্য।
যুবক যুবতীর অবাধ মেলামেশাঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট এর অনুষ্ঠান উদযাপনের মাধ্যমে শুরু হয় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দেশে যুবক-যুবতীর অবাধ মেলামেশা। এ সময় বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার, নাইট ক্লাব, সমুদ্র সৈকত ইত্যাদি জায়গা গুলোতে শুরু হয় যুবক যুবতীর বিভিন্ন খোলামেলা মেলামেশা নাচ গান আনন্দ উল্লাস। যা আমাদের ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। রাসূল সাঃ বলেছেন একজন ছেলে ও একজন মেয়ে নির্জনে এ ধরনের মেলামেশা বৈধ নয়।
অর্থ অপচয়ঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। যার জন্য অনেক অর্থ অপচয় হয়। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী অপচয় করা শয়তানের ভাই হিসেবে গণ্য করা হয়। তাই অতিরিক্ত অপচয় না করে সুষ্ঠুভাবে আনন্দ করাটাই উত্তম।
নেশাদ্রব্য সেবনঃ নতুন বছরকে বরণ করার আনন্দের বা বরণ কারার উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় অনেকেই নেশাই মগ্ন থাকেন এবং বিভিন্ন ধরনের মদ বা নেশা দব্য পান করে, বিভিন্ন অপকর্ম ঘটায়। যা ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী হারাম। কোনো রকম নেশা না করে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে আনন্দ করা যেতে পারে। সবারই উচিত এ ধরনের নোংরা অভ্যাসগুলো থেকে বের হয়ে আসা।
অশ্লীলতা ও বেহায়াপনাঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় চলে বিভিন্ন রকমের অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা। যা একেবারেই উচিত না এ সময় অনেকের বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে। তাই সবারই উচিত সতর্কতার সাথে আনন্দ উল্লাস উদযাপন করা। অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা মত নোংরা অভ্যাস পরিত্যাগ করা।
ট্যাটু আঁকাঃ নতুন বছরকে বরণ করার উপলক্ষে অনেকেই আছেন শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য ট্যাটু করে থাকেন। যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। এছাড়াও এটি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাছাড়াও নকল যেকোনো কিছুই হারাম বা নিষিদ্ধ।
গান বাজনা করাঃ থার্ট ফাস্ট নাইট উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় গান বাজনা আয়োজন করা হয়। ব্যাপক সাউন্ড দিয়ে সারারাত বিভিন্ন জায়গায় ডিজে পার্টি, কনসার্ট, অশ্লীল নৃত্য, ফানুস উড়ানো ইত্যাদি কাজগুলো করে থাকেন। যা অনেক সময় অনেকের বিরক্তির কারণ হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত গান-বাজনা ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী হারাম।
সময়ের অপচয়ঃ প্রতিটা দিনের মত থার্টি ফার্স্ট দিন টাও একই রকম। তাই অযথা থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন সময় নষ্ট করে থাকি। আমাদের সকলেরই উচিত সময় নষ্ট না করে নিজেদের কাজের দিকে মনোযোগী হওয়া এবং আগের বছরগুলোতে যে কাজগুলো অসম্পূর্ণ রয়েছে সেগুলো নতুন বছরে সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করা। সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাওয়া।
থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে
থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকা আমাদের সবারই প্রয়োজন। আমরা অনেকেই আছি থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করি। কিন্তু কেন করি কোথায় থেকে আসলো এই দিবস তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। আজকের আর্টিকেলে আপনাদের থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য জানানোর চেষ্টা করব। মূলত থার্টি ফাস্ট নাইট ৩১ এ ডিসেম্বর রাত বারোটা পর উদযাপন করা হয়ে থাকে বর্তমানে।
কিন্তু আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তারিখে থার্টি ফাস্ট নাইট পালন করা হতো। আমরা ইতিমধ্যে ফাস্ট নাইট এর ইতিহাস সম্পর্ক উপরে আলোচনা করে আসছি। তা থেকে অবশ্যই বিস্তারিত জানতে পেরেছেন আপনারা। বাংলাদেশের মূলত ২০০০ সালে নতুন বছর বরণ করার অনুষ্ঠান শুরু হয়। যা বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছেন।
বিভিন্ন সময় নববর্ষ উদযাপন করা হলেও পরিপূর্ণভাবে ১৯৮২ সালে পহেলা জানুয়ারি নববর্ষ পালনের দিন নির্ধারিত করা হয়েছে। মূলত ১৯৫২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এই দিনটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তারপর থেকেই সারা বিশ্বে এই দিবসটি নিজেদের মতো করে অনেক ধুমধাম করে উৎযাপন করা হয়।
থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে ইসলাম কি বলে
থার্টি ফার্স্ট ফাস্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে ইসলামী কি বলে জেনে নিন। অনেকেই এটি জানেন না। আমরা অনেকেই না জেনে থার্টি ফার্স্ট নাইট খুব ধুমধাম করে পালন করে থাকি। কিন্তু আমাদের জানা উচিত থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন করা আসলেই ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী উচিত কিনা। মূলত ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন করা শিরক এবং হারাম।
কেননা ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী গান বাজনা নেশা করা নাচ করা বেপর্দায় চলা বা বিজাতীয় কৃষ্টি ও অপসংস্কৃতি সামর্থ্য করে না। এগুলো একেবারে নিষিদ্ধ এছাড়াও যারা শিরক করে তাদেরকে মুশরিক বলা হয়। আর একজন মুসলমান হিসেবে কখনোই এ কাজগুলো করা উচিত না। কেননা ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী গান বাজনা আতশবাজি বা এ ধরনের খোলামেলা আনন্দ উল্লাস নিষিদ্ধ।
এছাড়াও থার্টি ফার্স্ট নাইট উৎসবকে বিজাতীয় সংস্কৃতি বলে বিবেচিত হয়। এই অনুষ্ঠানের এই উৎসবের মাধ্যমে যুব সমাজ ও নারী সমাজ ধ্বংস নিয়ে আসে। শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ। বিভিন্ন জায়গায় অনেক রকমের দূর্ঘটনাও ঘটে থাকে এই দিনে।
থার্টি ফার্স্ট নাইট হালাল নাকি হারাম
থার্টি ফার্স্ট নাইট হালাল নাকি হারাম এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান চলুন তাহলে জেনে নিন। পুরো বিশ্বে এটি উৎসবমুখর পরিবেশের মাধ্যমে পালন করা হয়ে থাকে। তবে এটি মুসলমানদের জন্য বা ইসলাম ধর্মের জন্য হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কেননা রাত বারোটার পর থেকেই নববর্ষ বরন উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম আতশবাজি ফুটানো হয় নাচ গান করা হয়।
বিভিন্ন ধরনের মদ্যপান করা হয় যা আমাদের ধর্ম অনুযায়ী নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মধ্যরাতে ব্যাপক জ্বরে গান বাজনা শুরু হয় যা অনেক সময় মুসলমানদের এবাদত করতে অনেকটাই অস্বস্তিকর অবস্থা ফেলে। তাছাড়াও থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করা মুসলিম কালচারাল না। এটি মূলত এসেছে অগ্নি পূজকদের মাধ্যমে এছাড়াও অগ্নিপূজকদের শিরকী বিশ্বাস রয়েছে এর উপর। যা মুসলমানদের জন্য একদম বৈধ নয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
রসূল সাঃ বলেছেন যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য রাখে তবে সে তার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। তাছাড়াও ইসলাম আমাদের সুষ্ঠু ও সুন্দর সংস্কৃতি দিয়েছেন। তাই নিজেদের সংস্কৃতি রেখে বিজাতীয় সংস্কৃতি পালন করা উচিত না। ইসলামিক সংস্কৃতি মধ্যে ঈদ রয়েছে আকিকা রয়েছে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল রয়েছে যেগুলো মুসলিমদের জন্য জায়েজ। এছাড়াও থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন ইসলামের আদর্শ ও চেতনার সম্পূর্ণ বিপরীত তাই একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে এ ধরনের দিন পালন না করাই উচিত।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের সামাজিক ক্ষতি
থার্টি ফাস্ট নাইটের সামাজিক ক্ষতি গুলো কি চলুন জেনে নিন। বর্তমানে থার্টি ফার্স্ট নাইট এমনভাবে উদযাপন করা হয় যা এক রকমের আতঙ্কর বিষয় বটে। অনেক জায়গায় অনেক রকমের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে এই দিনটিতে।এছাড়াও চারিদিকে বিভিন্ন শব্দ দূষণ অনেকেরই বিরক্তর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।তাছাড়াও এ সময় রাস্তাঘাটের দুর্ঘটনাও ঘটে অনেক। অনেক তরুণ তরুণীরা বিভিন্ন ধরনের নেশায় মগ্ন থাকে। যা সামাজিক দৃষ্টিতে খুবই বাজে। আরো কিছু সামাজিক ক্ষতি জেনে নিন।
স্বাস্থ্য বিপর্যয়ঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট বিভিন্ন ঘনবসতি এলাকায় বিশেষ করে ঢাকায় বা অন্যান্য শহর অঞ্চলে বিকট শব্দের সাউন্ড বক্স বাজানো হয় এবং বিভিন্ন ধরনের বাজি ফোটানো হয়। যা জনসাধারণের জন্য অনেকটাই স্বাস্থ্য বিপর্যয় হয়ে পড়ে। এতে অনেক বাচ্চা ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়াও বৃদ্ধাদের জন্য অনেক সমস্যা হয়ে যায়। বিকট শব্দ দূষণের ফলে অনেক সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই কখনোই মূল্যবোধ ও বিবেকবোধ ব্যক্তিরা এ ধরনের উৎসব উদযাপন করবে না। আর করলেও সতর্কতার সাথে করা উচিত।
নিরাপত্তা ঝুঁকিঃ বর্তমানে প্রায় প্রতি বছরই দেখা যায় থার্টি ফার্স্ট নাইটের ফানুস উড়ানোর মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটতে। ২০২২ সালেও দেখা গেছে একজন মহিলার প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছারখার হতে। এছাড়াও একটি নিষ্পাপ শিশুর জীবনও চলে গেছে। তাই বছরের শুরুটা সুষ্ঠ সুন্দর স্বাভাবিক উদযাপন করাটাই উত্তম বা উচিত। কিন্তু অনেকেই আছেন এগুলার তোয়াক্কা না করে নিজেদের মতো বিভিন্ন অনুষ্ঠান আনন্দ উৎসব করে থাকেন। যা অনেকেই নিরাপত্তার ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অপচয়ঃ নতুন বছর বরণ উপলক্ষে প্রচুর পরিমাণে অর্থ অপচয় ও সময় অপচয় হয়ে থাকেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বিভিন্ন ধরনের আতসবাজি, সাউন্ড বক্স, ফানুস বিভিন্ন নেশা দব্য খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিপুল পরিমাণে অর্থ ব্যয় করে। যা এক প্রকারের অপচয় ছাড়া কিছুই না। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ডিজে পার্টি আয়োজন করা হয়। সেখানেও বিপুল পরিমাণে অর্থ অপচয় করা হয়ে থাকে।
বিপর্যস্ত প্রকৃতিঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে চারিদিকে শুরু হয় বিভিন্ন জমজমাট উৎসবের যার মাধ্যমে আশে পাশের পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন খোলা জায়গায় বা আকাশে আতশবাজি ফুটানো হয় যা মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন পশুপাখিও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এছাড়াও অনেক পাখি প্রাণ হারায় এগুলোর জন্য। তাই নতুন বছরের নতুন সকালটা সুন্দর সুষ্ঠু পরিবেশ হওয়াটা উচিত।
থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে সর্তকতা
থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে সর্তকতা গুলো দেখে নিন। পুরো বিশ্বব্যাপী আনন্দময় উৎসবের মাধ্যমে বরণ করে নেওয়া হয় বছরের প্রথম দিনটিকে। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে এই দিনটিতে। বিভিন্ন ধরনের জমকালো পটকা ফোটানো আতশবাজি ফানুস পোড়ানো ইত্যাদি কার্যকলাপ গুলো করা হয়। যার দ্বারা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।
এইজন্য থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে আমাদের সবারই উচিত সতর্কতা অবলম্বন করা। এছাড়াও আমরা ইতিমধ্যে উপরে থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস সহ আরো কিছু বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে আসছি। তা থেকে আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারছেন কতটা সতর্কতা হওয়া উচিত সবারই।মূলত কোন অনুষ্ঠানে উদযাপন করা ভুল কিছু না। তবে সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ বজায় রেখে যদি আনন্দ উল্লাস করা যায়।
অন্য কারো ক্ষতি না করে বা অন্যদের সমস্যার কারণ না হয়ে। তবে যে যার মত আনন্দ উপভোগ করতেই পারে। তবে মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করা। তাই আমরা যারা মুসলমান রয়েছি। নিশ্চয়ই তাদের উচিত এ ধরনের আচার অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকা এবং তরুন তরুনীদের উচিত বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে থার্টি ফাস্ট নাইট নিয়ে স্ট্যাটাস বা পোস্ট না করা। নিজেদের ধর্মের প্রতি সম্মান জানানো এবং সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা সবারই উচিত।
নতুন বছরে আমাদের করণীয়
নতুন বছরের আমাদের করণীয় বিষয়গুলো জানুন। নতুন সবকিছুই আমাদের কাছে যতটা প্রিয়, ঠিক ততটাই পুরনো জিনিসগুলো প্রতিও মায়া কাজ করে। তারপরেও নতুন কে বরণ করার জন্য পুরানো অনেক কিছুই আমাদের বর্জন করার প্রয়োজন হয়। ঠিক তেমনিও নতুন বছর শুধু মাত্র নতুনের আগমনী নয় বরং নতুন বছর মানে পুরাতনের বিদায় ও বটে। নতুন বছর বরণ করতে আমরা বিভিন্নভাবে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠি।
অথচ একটা বারও ভেবে দেখি না আমাদের জীবন থেকে আরো একটি বছর গাছের পাতার মতো ঝরে গেল। আমরা আরো একটি বছর সামনে এগিয়ে চলছি। জীবন থেকে আরো একটি বছর হারিয়ে ফেলছি। আমরা যদি একটু বিবেক বিবেচনা করি তবে এক একটি নতুন বছর আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়। কেননা সব নতুনই আনন্দময় হয় না সকালের সূর্যোদয় আমরা সবাই পছন্দ করি।
কিন্তু এমন এক দিন আসবে যে দিন এতো সুন্দর ভরের সূর্য আমরা আর দেখতে পাবো না। কেননা আমাদের জন্মের সাথে সাথে আল্লাহতালা মৃত্যু লিখে রাখছেন। প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তাই আমাদের সবারই উচিত নতুন বছর উপলক্ষে বিগত বছরের ভুল ত্রুটি গুলো সংশোধন করা। নতুন বছরে নতুন করে সবকিছু সাজানো। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নতুন বছরে ভালো কোন কাজ করা।
শেষ কথাঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস
থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস সম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিস্তারিত তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি আজকের আর্টিকেলে। এছাড়াও থার্টি ফার্স্ট নাইট ইসলামের দূষ্টিতে কেমন, থার্টি ফার্স্ট নাইট কি সহ আরো অনেক বিষয় আলোচনা করা হয়েছে আজকের আর্টিকেলে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি মনোযোগ দিয়ে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তবে অবশ্যই থার্টি ফার্স্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
মূলত সারা বিশ্বে থার্টিফার্স্ট নাইট পালন করা হয় নতুন বছরকে বরণ করার জন্য। বিভিন্ন ধরনের আচার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। তবে ইসলামে থার্টি ফার্স্ট পালন করা বৈধ নয়। তাই সকল মুসলমান দের উচিত সকল প্রকার এ ধরনের আচার অনুষ্ঠান থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে থার্টি ফাস্ট নিয়ে স্ট্যাটাস বা বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। নতুন বছরের চেষ্টা করবেন সুন্দর করে সাজানোর। নতুন বছরটা শুরু হোক নতুন ভালো কোন কাজের মাধ্যমে।
লানিং টিপস ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url