গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় জানুন
গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়, জানতে চাচ্ছেন তো। তাহলে আপনার জন্য আজকের আর্টিকেলটি উপকারে আসবে। আজকের আর্টিকেল এ থাকছে ঝালের ক্ষতিকারক দিকগুলো ও গর্ভাবস্থায় কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা গুলো।
থাকছে গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়। বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় পানি কতটুকু খেতে হবে। মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা এইসব বিষয়গুলো সহ আরো কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি গর্ভবতী হন, তবে দেখে নিন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয
- গর্ভাবস্থায় কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা
- বেশি ঝাল খাওয়ার ক্ষতিকারক দিকগুলো
- গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
- গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় বেশি মুড়ি খেলে কি হয়
- শেষ কথাঃগর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়, এটি অনেক গর্ভবতী মায়েদের জানার অনেক আগ্রহ থাকে। চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানি। গর্ভাবস্থায় মায়েদের রুচির অনেক পরিবর্তন হয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। এ সময় অনেকেই আবার কিছু খেতেই চায় না। তাছাড়াও এ সময় গর্ভাবস্থায় মেয়েদের যেকোনো রোগ সহজেই হয় যেমন জ্বর কাশি সর্দি ডায়রিয়া আমাশয় ইত্যাদি
এই রোগ গুলো শরীরে খুব সহজেই হয়। এগুলো কিন্তু ঝালের জন্য অনেক সময় হয়ে থাকে। তাছাড়াও বুক জ্বালা পেট ব্যথা এইসব অস্বস্তিকর কারণও হতে পারে ঝাল। যদি অতিরিক্ত মাত্রায় ঝাল খাওয়া হয় এবং তা যদি বডিতে এডজাস্ট না করে তবে অনেক সময় এই রোগ গুলো হতে পারে।যা বাচ্চার জন্য খুবই ক্ষতিকারক। কেননা মায়ের শারীরিক সমস্যা বাচ্চার উপর প্রভাব ফেলে।
তাই সহনশীল মাত্রই ঝাল খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার প্রতি নেশা যদি থাকে তবে তা পরিহার করতে হবে। এমনিতেই গর্ভাবস্থায় পানিবাহিত ও বায়ুবাহিত রোগ গুলো দ্রুত দেখা দেয়। তাই মায়েদের স্বাস্থ্যের প্রতি একটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন হয়। তবে আপনি যদি ঝাল খেতে চান কাঁচা মরিচটা বেছে নিতে পারেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
গুড়া মরিচ বা শুকনা মরিচ বাদ দিয়ে কাঁচা মরিচটা খেতে পারেন। এতে আপনি সুস্থ থাকবেন। আর আপনি সুস্থ থাকলে, আপনার সন্তানও সুস্থ থাকবে। তাই অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আর ঝাল খেলেও তা সহনীয় মাত্রায় খাবেন। তাছাড়াও কাঁচা মরিচের অনেক গুনাগুন রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
কেননা গর্ভাবস্থায় প্রচুর ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি গ্রহণ করার দরকার হয়। একজন গর্ভবতী মায়ের দৈনিক সর্বনিম্ন ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করার দরকার হয় এবং সর্বোচ্চ দুই হাজার মিলিগ্রাম গ্রহণ করতে পারবেন। ভিটামিন সি এর ভালো উৎস হল কাঁচামরিচ। তাহলে দেখে নিলেন গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়। চলুন এবার গর্ভাবস্থায় কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা গুলো দেখে নিন।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কাঁচা মরিচ খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা মরিচ সাধারণত খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এই কাঁচা মরিচের বিশেষ এক উপাদান রয়েছে তা হল ক্যাপসাইকিন যা মরিচের ঝাল বাড়ায়। এই ক্যাপসাইকিনে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আইরন, পটাশিয়াম এবং খুবই সামান্য পরিমাণে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট।
মূলত এই উপাদান গুলোর জন্যই মরিচ খেতে মজা লাগে। ভিটামিন সি এর উৎকৃষ্ট উৎসব বলতে পারেন কাঁচা মরিচকে। যা গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। শিশুর সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করে এবং মায়ের রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ার মতো রোগ থেকে রক্ষা করে । তাছাড়াও কাঁচামরিচের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। চলুন নিচের উপকারিতা গুলো দেখে নিন।
- কাঁচা মরিচে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জ্বর সর্দি কাশি ইত্যাদির রোগ থেকে রক্ষা করে।
- বিভিন্ন কাটা ছাড়া ও ঘা শুকানোর জন্য উপকারী এটা।
- কাঁচা মরিচা আছে ভিটামিন এ যা হাড় ও দাঁত এবং মিউকাস মেমব্রেন কে ভালো রাখতে সহায়তা করে
- প্রতিদিন একটি করে কাঁচা মরিচ খেলে রক্ত জমাট বাধার ঝুঁকি কমে যায়
- শরীরের উচ্চ মাত্রার চর্বি নষ্ট করে এবং মেদ কমাতে সাহায্য করে
- খাবার হজমেও এটি সাহায্য করে
- কাঁচা মরিচ রক্তের কোলেস্টেরলর কমায় যা আমাদের হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করে
- নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে
কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণগুলো
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচামরিচা রয়েছে ৪০ কিলো ক্যালরি শক্তি। যা একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দৈনিক শক্তির ১.৬% পূরণ করে এবং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার দৈনিক শক্তির ১.৭৪% পূরণ করে। তাহলে বুজছেন গর্ভাবস্থায় কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা কতো। গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় এবং কোন ঝালটা আপনার জন্য খাওয়া কার্যকর হবে আশা করছি বুঝেছেন। আরো দেখুন,
- প্রথম তিন মাস অনুযায়ী একজন গর্ভবতী মহিলার দৈনিক শক্তির ২.২২% পূরণ করে।
- দ্বিতীয় তিন মাস অনুযায়ী একজন গর্ভবতী মহিলার দৈনিক শক্তির ১.৮২% পূরণ করে।
- শেষ তিন মাস অনুযায়ী একজন গর্ভবতী মহিলার দৈনিক শক্তির ১.৬৭%পূরণ করে। তাছাড়াও আরো রয়েছেন,
- শর্করা ৯ গ্রাম
- খাদ্য আঁশ ১.৫ গ্রাম
- সোডিয়াম ৯ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম ৩২২ মিলিগ্রাম
- আমিষ ১.৯ গ্রাম
- চিনি ৯ গ্রাম
- ভিটামিন সি ১৪৪ মিলিগ্রাম
- ফ্যাট ০৪ গ্রাম
- আইরন ১ মিলিগ্রাম।
কাঁচা মরিচের এই উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারী। তবে মরিচ কাঁচা খাওয়াই ভালো। কারণ ৩৭০° ডিগ্রি তাপমাত্রায় বেশি রান্না করলে কাঁচা মরিচের ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। তাই এর আসল উপকারিতা পেতে প্রতিদিন খাবারের সাথে একটি করে কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
বেশি ঝাল খাওয়ার ক্ষতিকারক দিকগুলো
বেশি ঝাল খাওয়ার ক্ষতিকারক দিক গুলো কি চলুন জেনে নিন এবং গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আপনি অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে তা পড়েছেন ।অতিরিক্ত যে কোন প্রকার ঝাল আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়। এখন অনেক রকমের লঙ্কা পাওয়া যায়। যেগুলো গর্ভবতী মা খেতে পছন্দ করে। কিন্তু এগুলোর মাত্রা যদি বেশি হয়।
তবে শরীরের জন্য ক্ষতিকারক দিক হওয়ার কারণ হতে পারে। তাই ঝাল খাওয়ার নিয়ে একটু সচেতন হতে হবে এবং সহনশীল মাত্রায় গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন। এতে মা ও শিশু উভয়ই ভালো থাকবেন। কেননা অতিরিক্ত ঝাল মা ও শিশু উভয়ের জন্যই খারাপ। তাই চলুন ঝাল খাওয়ার কিছু ক্ষতিকারণ দিকগুলো দেখে নিবেন এবং সতর্ক হবেন।
- লাল লঙ্কা বা শুকনো মরিচের ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কম থাকে
- অতিরিক্ত ঝাল খেলে চোখ নাক দিয়ে পানি পড়ে গরমও বিভিন্ন অস্বস্তি লাগে
- শুকনো মরিচ গুড়াতে ভালো রঙের জন্য বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ও ভেজাল ব্যবহার করা হয় যা শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকারক
- মরিচ গুঁড়া ত্বকের সংস্পর্শে আসলে অনেক সময় এলার্জি সৃষ্টি হয়
- অতিরিক্ত ঝাল খেলে বুক জ্বালা ও অম্বলের সমস্যা দেখা দেয়
- গর্ভে ভ্রুনের বৃদ্ধি প্রক্রিয়া বাধা প্রাপ্তহয়
- বমি ও হজমের সমস্যা দেখা দেয়
অনেক সময় শরীর খারাপের কারণও হতে পারে অতিরিক্ত ঝাল। যা গর্ভে থাকা বাচ্চার উপর প্রভাব ফেলে। ঝাল খাওয়ার পাশাপাশি অনেক গর্ভবতী মহিলা টক খেতেও পছন্দ করে। তাই চলুন গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়, জেনে নিন।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
কাঁচা বা আধা সিদ্ধ ডিমঃগর্ভাবস্থায় কাচা ও আধা সিদ্ধ ডিম খাওয়া যাবে না।কারণ এতে স্যালম্যেনেলা নামক ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা খাদ্য বিষক্রিয়া ঘটায়। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় ডিম সম্পূর্ণ সেদ্ধ করে খাবেন বা ভেজে খাবেন।
কাঁচা পেঁপেঃএই সময় পেঁপে খাওয়া যাবে না। পেঁপেতে থাকে পেপসিন এবং পাপাইন যা ভ্রণের জন্য ক্ষতিকারক।পেঁপে খেলে ভ্রণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাই পেঁপে এড়িয়ে চলুন। তবে পাকা পেঁপে খাওয়া উপকারী।
সজিনাঃ সজিনা অনেক উপকারী সবজি হলেও গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া যাবে না। সজিনা আমাদের রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। তবে সজিনাতে আলফা সিস্টেরল উপাদান থাকায় এটি গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকারক।
বেগুনঃ বেগুন এর অনেক গুন থাকা সত্বেও এটি গর্ভবতী মায়েদের খাওয়া যাবে না।
কাঁচা মুলাঃ এই সময় কাঁচা কোন শাক সবজি খাওয়া ঠিক না।কেননা এগুলো প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে।তাই কাঁচা মুলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি টক খেলে কি হয় এটা অনেকেই ভাবেন। উপরে ইতিমধ্যে গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় তা আলোচনা করেছি এখন টক খাওয়া সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নিন। গর্ভাবস্থায় টক জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে। বিশেষ করে টক জাতীয় ফলে ভিটামিন সি রয়েছে প্রচুর যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন সি ও খনিজ মুখে রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় খাবারের প্রতি মেয়েদের ঝোক বেশি থাকে এর মধ্যে টক জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণটা বেশি কাজ করে । এই সময় দেহের সোডিয়াম ও অম্ল এর চাহিদা বৃদ্ধি পায় এজন্য টক জাতীয় খাবারের প্রতি মেয়েদের আকর্ষণ বাড়েও বেশি। টক জাতীয় খাবারের মধ্যে বিভিন্ন আচার, তেতুলের আচার, তেঁতুল, কাঁচা আম, কামরাঙ্গা বিভিন্ন টক জাতীয় ফল।
এইসব টক জাতীয় ফল দেহের ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও মুখের রুচি আনতেও সাহায্য করে কিন্তু অতিরিক্ত টক জাতীয় খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক না। অতিরিক্ত টক খেলে গর্ভের বাচ্চার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য পরিমাণ মতো টক খাবেন।অতিরিক্ত টক খেলে হাইপার ও অ্যাসিডিটি হতে পারে।
অনেকেই আছেন টক ফল লবণ দিয়ে খেতে পছন্দ করে যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না। এতে গ্যাস বেশি করে এবং বমি হয়। তাছাড়া আপনি টক নিশ্চিন্তে খেতে পারেন তবে একটু বুঝে শুনে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে বিকেল ও সন্ধ্যায় টক জাতীয় খাবার না খাওয়ার উত্তম।
গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয় চলুন বিস্তারিত জেনে নিন। একজন সুস্থ মা ও শিশুর জন্য পানির কোন বিকল্প নেই। এই সময় অন্য স্বাভাবিক দিন গুলোর থেকে বেশি পরিমাণে পানি পান করা প্রয়োজন। পানি কম পান করলে বমি ভাব, মাথা ঝিমানো সহ কষ্ঠোকাঠিন্য হতে পারে। এই সময় এমনিতেই শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে।
তাই পানি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং শরীর কে সতেজ ও ঠান্ডা রাখে।তাছাড়া পানি কম পান করলে গর্ভে থাকার বাচ্চার নানান রকমের সমস্যা দেখা দেয়। পানি গর্ভের শিশুর পুষ্টি গুন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ গ্লাস পান করা উত্তম। পানি গর্ভে ভ্রন বিকাশে সাহায্য করে এবং বাচ্চাকে নড়াচড়া করতে সহায়তা করে ।
গর্ভাশয়ে এ্যামনিওটিক ফ্লইড লেভেল ঠিক রাখতে পানি সাহায্য করে। পানির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি গুন গুলো রক্তের মাধ্যমে ভ্রনে গিয়ে পৌছায়।তাহলে বুঝেন পানি কম খেলে কতো সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া মায়ের বুক এর দুধ তৈরিতেও পানি সাহায্য করে। ভ্রনের কোষ বৃদ্ধির জন্য পানির দরকার হয় যা মায়ের শরীর থেকে আসে। গর্ভাবস্থায় পানি শূন্যতার কারণে লেবার প্রেইন বাড়ে।
গর্ভাবস্থায় পানি কম পান করলে সন্তান প্রসবের সময় কন্ট্রাকশন হয়। ফলে প্রি ম্যাচুউর বেবি জন্ম নেয় এতে মায়ের অনেক কষ্ট হয় তাহলে বুজছেন পানির গুরুত্ব কতটা। আর পানি কম খেলে কতো সমস্যা হতে পারে মা ও শিশুর জন্য। তাই সারা দিন অল্প অল্প করে কমপক্ষে ২ গ্লাস করে পানি পান করুন এবং আপনার গর্ভাধারণ পর্যায়টি স্বাস্থ্যকর অবস্থায় রাখুন। আশা করছি পানি কম পান করলে কি সমস্যা হতে পারে বুঝতে পারছেন।
গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে কি হয় চলুন বিস্তারিত জানি। গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। শরীরে শক্তি কমে যায়। গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে ওজন কমে যায়।আয়রন ও হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি দেখা দেয়। অনেক সময় ধরে না খেয়ে থাকলে গর্ভে শিশুর পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করতে সমস্যা হয়এতে শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সমস্যা করে।
মায়ের শরীর দূবল লাগে এবং পায়ে পানি আসা সহ আরও অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাই চেষ্টা করবেন কিছু না কিছু খাওয়ার। খেতে ইচ্ছে না করলেও অল্প করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। গর্ভাবস্থায় ঝাল বেশি খেলে কি হয়, সাথে না খেয়ে থাকলেও কি হয় জানানোর চেষ্টা করলাম আশা করছি শরীরের প্রতি সচেতন হবেন। এতে মা ও শিশু উভয়ের জন্য ভালো হবে।
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় চলুন দেখে নিন। গর্ভাবস্থায় সাধারণত মায়েদের শরীর একটু দূবল থাকে। এ সময় ঘুম পাওয়াটাই স্বাভাবিক কিন্তু অতিরিক্ত ঘুম মা ও শিশু উভয়ের জন্যই খারাপ। সব সময় শুয়ে থাকলে ব্লাড শুগার বেড়ে যেতে পারে। হজমের সমস্যা হতে পারে ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই কাজ করবেন একটু হাটাহাটি করবেন।
প্রয়োজনে ব্যায়াম করতে পারেন তরপত যাবতীয় কাজ গুলো নিজই ধীরে ধীরে করার চেষ্টা করবেন। এতে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দিবে শরীরে। আবার দেখবেন বেশি প্ররিশ্রম হবে এমন কাজও করবেন না। ভারি কোন কাজ করার জন্য গর্ভের বাচ্চার সমস্যা হতে পারে। তবে ঘুম এর ক্ষেত্রে রাতে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। দিন এ বেশি না ঘুমানোই ভালো খুব বেশি হলে ১ থেকে দেড় ঘন্টা রেস্ট নিতে পারেন ।
চেষ্টা করুন ৮-১০ ঘন্টা রাতে ঘুমানোর এতে মা ও শিশু উভয়েই ভালো থাকবেন। অতিরিক্ত শুয়ে থাকার ফলে মায়ের ওজন বেড়ে যায়।এতে নরমাল ডেলিভারি হতে সমস্যা। তাছাড়া ডায়বেটিস হওয়ায় সম্ভাবনাও থাকে। তবে যে সব মায়েদের সমস্যা ডক্টর রেস্ট নিতে বলছে তাদের ব্যাপার আলাদা। বিভিন্ন সমস্যার জন্য অনেক সময় ডক্টর তাদের বেড রেস্ট নিতে বলে।
গর্ভাবস্থায় বেশি মুড়ি খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মুড়ি খেলে কি হয় এবার চলুন এটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানি। মুড়ি বেশির ভাগ মানুষের পছন্দের খাবার। অনেক সময় টাইম পার করার জন্য বা আড্ডা দেওয়ার জন্য মুড়ি সবার সেরা। মেয়েরাও মুড়ি পছন্দ করে অনেক। নিজের হাতে মুড়ি মাখিয়ে সবাই মিলে খাওয়া আর গল্প করা খুব মজা বিশেষ করে বিষ্টির দিন এ। বাহিরের বন্ধুরা সবাই মিলে ঘুরতে গিয়েও মুড়ি মাখানো খাওয়ার হয়।
এবার চুলুন গর্ভবতী মহিলার জন্য মুড়ি কতটা উপকারী তা জানি। মুড়ি কিন্তু মা ও শিশুর পুষ্টির ঘাটতি পূরন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাছাড়াও মুড়ি মা ও শিশুর ভিটামিন ও খনিজের অভাব পূরন করে। মুড়িতে থাকা ক্যালসিয়াম,ফাইবার ও প্রোটিন মা ও শিশুর হাড়ের ক্ষয় দূর করতে সাহায্য করে। এই সহজলভ্য খাবার মুড়ি গর্ভবতী মায়ের এনার্জি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
তাছাড়াও এই সময় মায়েদের বমি বমি ভাব হয় কোন কিছু খেতে ইচ্ছে করে না এই বমি বমি ভাব দূর করতেও মুড়ি সাহায্য করে। এই সহজলভ্য মুড়িতে অ্যাসিডের পরিমাণ কম থাকায় আপনি খেতে পারেন তবে অতিরিক্ত খাবেন না। শরীরে জন্য ভালো হবে এমন টা বুজেই খাবেন। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে বিপরীত প্রক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এমনিতেও গর্ভাবস্থায় যে কোন খাবার বুঝে শুনে খেতে হয়। তাই খাবারের প্রতি সচেতন হবেন।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। সাথে আরও আলোচনা করেছি কোন ঝাল খাওয়া উপকার হবে আর কোন ঝাল খাওয়া ক্ষতি হবে। তাছাড়াও গর্ভাবস্থায় মায়ের টক ও মুড়ি খাওয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত শুয়ে থাকলে কি সমস্যা হতে পারে সহ আরও কিছু বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আশা করছি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন এবং খাবারের প্রতি সচেতন হবেন। মনে রাখবেন আপনি ভালো থাকবেন আগে তারপর আপনার সন্তান ভালো থাকবে। আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে এমন আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আপনার ও আপনার অনাগত সন্তানের জন্য শুভকামনা রইলো।
লানিং টিপস ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url