শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় কি এটা নিয়ে যারা  ভাবছেন। মূলত তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি। উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য থাকছে পুড়ো আর্টিকেল জুড়ে। শীতের শুষ্কতা ও খসখসে ভাব দূর করার উপায়।

শীতে-ত্বকের-উজ্জ্বলতা-বৃদ্ধির-উপায়

শীতে ছেলেদের ত্বকের যত্ন, শীতে কি ব্যবহার করলে চেহারা উজ্জল ও ফর্সা দেখায়। চুলের যত্নে ঘরোয়া উপায় এবং শীতের ত্বক কালো দেখায় কেন সহ আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই মনোযোগ দিয়ে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় কি জানতে চাচ্ছেন তো, তবে চলুন জেনে নিন। আশা করছি প্রতিটা টিপস আপনার উপকারে আসবে। শীত আমাদের অনেকের কাছে খুব পছন্দের সিজন। শীত পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়। কিন্তু শীতে আমাদের স্কিনের অনেক বাড়তি যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। কেননা এ সময় আমাদের ত্বকের অনেক ধরনের বাড়তি সমস্যা দেখা দেয়। 

ত্বক হয়ে যায় রুক্ষ, শুষ্ক ও প্রানহীন এবং  মলিন। এ সময় তৈলাক্ত ত্বকের ব্যক্তিরা বেঁচে গেলেও। শুষ্ক ত্বকের জন্য শীত এক রকমের বিপদজনক । কেননা এ সময় ত্বক অনেক ডিহাইড্রেট হয়ে যায়। তাই এ সময় শুষ্ক, খসখসে ভাব দূর করতে নিয়মিত ক্লিনজিন ময়শ্চারাইজিং এর প্রয়োজন হয়। শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের এই  যত্ন গুলো করাই লাগে। এবার চলুন ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় টিপস গুলো দেখে নিন। 

ত্বককে হাইড্রেট রাখুনঃ ত্বকের যত্নে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। এটি আপনার ত্বককে হাইড্রেট করতে সাহায্য করবে। স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য হাইড্রেড রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 ক্লিনজার ব্যবহারঃ  সব ঋতুতে ক্লিনজার ব্যবহার করলেও, শীতের অন্তত দুই থেকে তিনবার ক্লিনজার ব্যবহার করবেন। ক্লিনজার হিসাবে কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে পারেন। কাঁচা দুধে কটন বার ভিজিয়ে মুখ ধুয়ে লাগাতে পারেন।এটি অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে। 

টোনার ব্যবহারঃ শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় হিসেবে টোনার আরেকটি উপাদান। যা চমৎকার কাজ করে ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করতে। টোনার এর মধ্যে রোজ ওয়াটার খুব ভালো কাজ করে বা গোলাপ জল। তাছাড়াও আরো ভালো ভালো ব্যান্ডের টোনার রয়েছে। আপনি আপনার ত্বক অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন।  টোনার  আমাদের স্কিনের ph এর  মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। স্কিনকে হাইড্রেশন করতে রোজ ওয়াটারের সাথে গ্রিসারিন বা অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে স্কিনে লাগাতে পারেন। এটি উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে।

ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করাঃ শীতে ত্বকের যত্নে ভালো মশ্চারাইজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনে কয়েকবার ত্বকের মশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। এটি শুষ্কতা হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে হাইড্রেট রাখে। ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে সকালে, গোসলের পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করবেন।

সানস্কিন ব্যবহারঃ শীতের সময় অনেকেই যে ভুলটা বেশি করে থাকে। তা হলো সানস্কিন, শীতের জন্য অনেকে সানস্ক্রিন লাগাতে চায় না। কিন্তু শীতের সময়ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। এটি সূর্যের বিভিন্ন ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। 

তেল অন্তর্ভুক্ত করুনঃ ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখতে মুখে তেল ব্যবহার করুন যেমন আর গান, জজোবা, নারিকেল  ইত্যাদি তেলগুলো হাইড্রেশন পুষ্টির জন্য খুবই উপকারী।

স্বাস্থ্যকর খাবার খানঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে স্বাস্থ্যকর খাবারের কোন বিকল্প নেই। বিভিন্ন  আন্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার ও ভিটামিন সি যুক্ত এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যুক্ত  খাবার গুলো প্রতিদিন এর খাবার তালিকায় রাখার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও  হালকা গরম পানি  ব্যবহার করবেন। এটি স্কিনকে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে।

প্রাণবন্ত থাকুনঃ  নিয়মিত ব্যায়াম করুন স্বাস্থ্যকর খাবার এর পাশাপাশি ত্বক ভালো রাখতে ব্যায়াম এর ভূমিকা অনেক। এটি রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে এবং স্কিনকে সুন্দর রাখতে সহায়তা করে।

পর্যাপ্ত ঘুমঃ  স্বাস্থ্যকর স্ক্রিনের জন্য ঘুমের কোন বিকল্প নেই। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমাবেন। ওমেগা ৩ ফাটি আছি যুক্ত খাবার খান। এগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

শীতে ত্বকের  উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে এ কাজগুলো করবেন। এতে আপনার ত্বক শুষ্কতা থেকে রক্ষা পাবে এবং স্কিন হবে সুন্দর সতেজ ও লাবণ্যময়।

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

শীতে ত্বকের যত্নের ঘরোয়া উপায় চলুন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। শীতে আমাদের ত্বকের প্রধান সমস্যা হলো ত্বক  শুষ্ক খসখসে হয়ে যায়। তাই এগুলো দূর করতে ঘরোয়া কিছু টিপস আমরা ব্যবহার করতে পারি। যার মাধ্যমে আমাদের ত্বক  সুন্দর হতে পারে। চলুন তাহলে ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে  ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর যায় দেখুন।

  • দুধঃ প্রতিদিন সকালে ঠান্ডা দুধ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবেন। তাতে ত্বক নরম ও মোলায়ন থাকবে। ত্বক সুন্দর রাখতে দুধের ভূমিকা অনেক। তাছাড়া এটি মুখের কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে সাহায্য করে। 
  • মধুঃ ত্বকের যত্নে মধু দারুণ কাজ করে। তাই মধু নিয়ে 15 মিনিট ত্বকে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষন রেখে এবং হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
  • লেবুঃ  স্ক্রাবের জন্য লেবুর দারুন কাজ করে। অতিরিক্ত চুল ও ময়লা দূর করতে এক টুকরো লেবু নিয়ে স্কাব করুন। কয়েক মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। এটি প্রাকৃতিকভাবে আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতে সাহায্য করবে। তবে ত্বক অনুযায়ী ব্যবহার করবেন। 
  • স্ট্রবেরিঃ চোখের নিচে থাকা র্ডাট সার্কেলের জন্য স্ট্রবেরি রস ব্যবহার করতে পারেন। এটি দারুন কাজ করে চোখের নিচে থাকা বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। 
  • কলাঃ শীতের ত্বক ভালো রাখতে পাকা কলা অনেক উপকারী। পাকা কলা, মধু, দুধ দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে দিতে পারেন।এটি ত্বক উজ্জ্বল করতে দারুণ সাহায্য করে। 
  • মধু ও ডিমের সাদা অংশঃ ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে মধু ও  ডিম দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগান।এটি আপনার ত্বক  নরম ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে। 
  • দইঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে নিয়মিত দই খেতে পারেন। এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। 
  • শসাঃ শসা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই কার্যকরী।এটি ত্বকের আদ্রতা বজায়  রাখে এবং বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 
  • অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরা ত্বকের বলিরেখা ও ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে করে উজ্জ্বল ও কোমল। 
  • নারিকেল তেলঃ খসখসে ও নিস্তেজ স্কিনের জন্য নারিকেল তেল দারুণ কাজ করে। আপনি চাইলে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও এটি ব্যবহার করতে পারেন। 
  • বাদাম তেলঃ উজ্জ্বল ও মসৃন ত্বক পেতে প্রতিদিন বাদাম তেল ব্যবহার করতে পারেন। ভালো ফলাফল পেতে মুখে ম্যাসাজ করে সারা রাত রাখতে পারেন। 
  • ওটমিল ও দুধঃ মুখের মূত কোষ দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল করে তুলে। 
  • পেঁপেঃ ত্বকের পোড়া ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এটি রোদে পোড়া, দাগ দূর করে। ত্বককে করে উজ্জ্বল ও আকর্ষনীয়। পাকা পেঁপের পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। 
  • গাজরঃ ত্বকের কোমলতা বৃদ্ধিতে গাজরের ভূমিকা অনেক। চন্দন গুঁড়া সাথে গাজরের প্যাক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। আরও ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করুন।
  • গোলাপজল ও গ্লিসারিনঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ও শীতে স্কিনের সুরক্ষার গ্লিসারিন ও গোলাপজল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্লিসারিন ত্বককে করে কোমল ও প্রানবন্ত। ত্বক সুন্দর রাখতে গোলাপজল ও দারুণ কাজ করে। 
  • কাঁচা হলুদঃ যুগ যুগ ধরে রুপ চর্চায় কাঁচা হলুদ ব্যবহার হয়ে আসছে। কাঁচা হলুদ ও দুধ দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে, হাতে, পায়ে ও গলায় লাগাতে পারেন। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে নিবেন। এটি ত্বক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় করে। 
  • টমেটোঃ টমেটোর রস, মধু, টকদই  এক সাথে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে লাগান।এটি ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাবটা দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে করে টানটান ও উজ্জ্বল। 

শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায়

শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় এর প্রথমেই জানি শুষ্ক ত্বক কি। শুষ্ক ত্বক হলো এমনই ত্বক যা ত্বকের মধ্যে সবসময় টানটান ভাব বুঝা যায়  ও সাদা সাদা চামড়া ওঠে এবং বিভিন্ন ধরনের র‍্যাশ,ফুসকুড়ি দেখা যায়। বিশেষ করে হাত,পা ও মুখে এগুলো বেশি হয়।সাধারণত শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়। যার কারণে তৈল গন্থি বেশি কমে যায় এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

তাই শরীরের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে কিছু টিপস মানতে পারেন।  সেগুলো চলুন এবার  জেনে নিন। শীত আমাদের সবার কাছে অনেক পছন্দের হলেও কিন্তু ত্বকের শুষ্কতা খুবই বিরক্তজনক। তাই শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি পেতে।  নিয়মিত নিম্নলিখিত কাজ গুলো করবেন। প্রথমেই আসি ময়শ্চারাইজার এর কথায়। শীতকালে সব থেকে জুরুরি হচ্ছে এটি। শীতকালে ময়শ্চারাইজার কোন বিকল্প নেই।

ত্বককে moisture রাখতে ময়েশ্চারাইজার কাজ করে। বাজারে অনেক রকমের ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। আপনি আপনার ত্বক অনুযায়ী বাছাই করে নিবেন। তবে লক্ষ্য রাখবেন ময়েশ্চারাইজার যেন hypoallergenic, fragrence free, paraben free  এবং  preservative free হতে হবে। তাছাড়া শুষ্ক ত্বকে এলার্জির রিয়াকশন দেখা দিতে পারে।কম সুভাষ যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন।এতে কেমিক্যাল কম থাকে।

আরো পড়ুনঃপুরুষের মুখের কালো দাগ দূর করার উপায় জানুন

তবে অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক হলে ব্যবহার করতে পারেন petroleum jell.  ড্রাই স্কিন এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন ceramides, shea butter, aloe vera, coconut oil, jojoba oil. কম্বিনেশন  ত্বকের জন্য ব্যবহার করতে পারেন clycerin, hyaluronic acid cream. তবে অবশ্যই শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার এর উপাদান গুলো  দেখে নিবেন। শুষ্ক ত্বকে দিনে কয়েকবার ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন।

তৈলাক্ত ত্বকে দিনে ২থেকে ৩ বার লাগাবেন। শুষ্কতা দূর করতে গোসলে ময়েশ্চারাইজিং বডি ক্লিনজার বা   ph blance সাবান ব্যবহার করবেন। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য লাগাবেন গ্লিসারিন ও নারিকেল তেল এবং অলিভ অয়েল। আর হ্যাঁ কসমেটিক কিনার সময়  দেখে নিবেন  যেন অ্যালকোহল ফ্রি হয়।শীতকালে শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই কার্যকরি হচ্ছে মধু।

নিয়মিত মধু লাগানোর জন্য ত্বক মসূন ও নরম হয়। প্রতিদিন এক চামচ মধু ও হাফ চামচ ঘি খেতে পারেন এটি স্বাস্থ্যে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। শীতকালে ত্বক ও চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতা রোধ করতে কিছু খাবার খেতে পারেন। এগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যেমনঃ 

  • পালংশাকঃ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে প্রচুর। যা আমাদের ত্বক ও চুল সুন্দর করে। 
  • টমেটোঃ টমেটোতে ভিটামিন সি রয়েছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। 
  • ফুল কপিঃ এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, কে ও ফলেট যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন এ ও বি এর অভাবেও ত্বক  শুষ্ক হয়ে যায়। বা যারা অপুষ্টিতে ভূগে থাকেন তাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। 
  • গাজরঃ ত্বক ও চুলের জন্য গাজর খুবই উপকারী। 

আদা চাঃ এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ এর ক্ষমতা বাড়ায়। শীতে রক্ত চলাচল কমে যায় আদা চা রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহায্য করে। 

 শীতে চুলের যত্নের ঘরোয়া উপায়

চুলের জন্য ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে চলুন জেনে নিন।  ত্বকের সমস্যার পাশাপাশি আমাদের চুলে অনেক রকমের সমস্যা দেখা দেয়। শীতকালে মাথায় খুশকি পরিমাণটা বেড়ে যায়। এজন্য চুল অনেক ঝরে পড়ে যায়। তাই শীতে ত্বকের পাশাপাশি চুলের জন্যে অতিরিক্ত যত্ন করার প্রয়োজন হয়।

শীতে-ত্বকের-উজ্জ্বলতা-বৃদ্ধির-উপায়

শীতের প্রতিদিনের রুটিন এর সাথে ঘরোয়া কিছু টিপস ফলো করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

  • চুল ঘন ঘন না ধোয়া চুল ঘন ঘন ধুইলে চুলের তৈল গন্থি নষ্ট হয়ে যায়।
  • ভালো কন্ডিশনার ব্যবহার করা। চুলকে হাইড্রেট করার জন্য ভালো কন্ডিশনার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিয়মিত ভালো এটি কন্ডিশনার ভেজা চুলে ব্যবহার করুন।
  • লিভ ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন আপনার চুলের অতিরিক্ত সমস্যা দূর করতে নিয়মিত পণ্যের পাশাপাশি একটি লিভ ইন কন্ডিশনার  ব্যবহার করুন।
  • চুল নিয়মিত কাঠের চিরুনি দিয়ে আচড়ানোর চেষ্টা করবেন। 
  • গরম পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন। 
  • চুলের রুক্ষতা দূর করতে মধুর প্যাক লাগাতে পারেন। 
  • চুলের যত্নে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন। দারুণ কাজ করে। 
  • চুলে অতিরিক্ত হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন এই সময়।
  • তোয়ালে ব্যবহার করবেন আলতো ভাবে।
  • আগা ফাটা চুল গুলো কেটে ফেলবেন।
  • অবশ্যই হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করবেন। 
  • চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে তেল ব্যবহার করবেন। 
  • মাসে ১থেকে ৪ বার ডিপ কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। 
  • আমলকির রস সপ্তাহে ১ দিন গোসলের ৩০ মিনিট আগে চুলে লাগিয়ে কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেলবেন। চাইলে আপনি এটি খেতেও পারেন।
  • ডিম, দুধ নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এগুলো চুলের জন্য খুবই উপকারী। 
  • তাছাড়াও ডাল,মাছ, মাংস ইত্যাদি প্রোটিন যুক্ত খাবার প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করবেন। 
  • যেকোন ধরনের বাদাম খাবেন।
  • খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল রাখার চেষ্টা করবেন। 
  • জাংক ফুড এড়িয়ে চলবেন।
  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন।
  • মাথায় খুশকি দূর করতে মৌরি ও সমপরিমাণ পানি দিয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে। পরের দিন মিহি করে চুলে লাগাতে পারেন। 
  • ১ টি ডিম, ১ চামচ মধু ও কয়েক ফোটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগান। বিশেষ করে আগায় ভালো করে লাগাবেন।২০ মিনিট পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিবেন। 
  • রাতে কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। 
  • ক্যাস্টয়েড অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। 
  • চুলের আগা ফাটা রোধ করতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। 

শীতের শুষ্ক হাওয়ায় ত্বকের সাথে সাথে দেখা দেয় চুলেও নানান ধরনের সমস্যা। ঝলমলে চুল গুলো হয়ে যায় রুক্ষ, শুষ্ক ও আগা ফাটা। শীতে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যায় কয়েক গুন।তাই শীতে চুল ও ত্বকের যত্নের বিকল্প নাই।

শীতে ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল

আমাদের ত্বকের জন্য অলিভ অয়েল খুবই কার্যকরি। এটি মূলত সব ধরনের ত্বকের যত্নেই খুবই উপকারী। শীত কালে ত্বক ও চুলের যত্নে দারুণ কাজ করে অলিভ অয়েল। তাছাড়াও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের পুষ্টি ও আগা ফাটা দূর করতে সাহায্য করে।  ত্বকের বয়সের ছাপ কমাতেও চমৎকার কাজ করে। ত্বক ও চুলের যত্নে অলিভ অয়েলর গুনাগুন বলে শেষ করা যাবেনা। তারপরেও ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল এর কার্যকারিতা চলুন দেখে নিন।

  • ময়েশ্চারাইজার হিসাবে দারুণ কাজ করে। এটি আপনি পা থেকে গলা পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন। 
  • অলিভ অয়েল আপনার ত্বকের মরা কোষ দূর করতে সাহায্য করে। 
  • ঠোঁট ফাটা দূর করতে চমৎকার কাজ করে। কয়েক ফোটা অলিভ অয়েল মধুর সাথে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগাতে পারেন। 
  • তাছাড়াও অলিভ অয়েল  মধু, চিনি দিয়ে স্রাব  বানিয়ে লাগাতে পারেন। 
  • অলিভ অয়েল দিয়ে  ফেইস মাস্ক বানাতে পারেন। এতে দারুণ ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। কয়েক ২ চা চামচ ফোটা অলিভ অয়েল,১ চা চমচ মধু, ডিমের কুসুম একটি দিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে লাগান।১০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিবেন। 
  • অলিভ অয়েলে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও বিভিন্ন ভিটামিন থাকায় ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। 
  • অলিভ অয়েল এ রয়েছে প্রাকূতিক ইমলিয়ন যা আমাদের ত্বককে ভিতর থেকে হাইড্রেট রাখে।ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে এবং আর্দ্রতা ভারসাম্য রক্ষা করে। 
  • অলিভ অয়েল ব্রন যুক্ত ত্বকের জন্য দারুণ কাজ করে। 
  • মেক-আপ রিমুভ করতেও ভালো কাজ করে। 
  • পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করতে সাহায্য করে। 
  • মুখ ও শরীরের ত্বক ভালো রাখে। শীতে ত্বকের জন্য অলিভ অয়েল খুবই ভালো কাজ করে 

শীতে ছেলেদের ত্বকের যত্নে করণীয়

শীতে ছেলেদের ত্বকের যত্ন নিবেন কিভাবে চলুন এবার দেখে নিন।শীতে ত্বকের যত্নে ছেলেরা বেশি অবহেলা করে। তাই তো বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও দেখা যায় তাদের। তাই ত্বক ভালো রাখতে একটু যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

  • ত্বক অনুযায়ী ফেসওয়াস ব্যবহার করবেন। 
  • গোসল শেষ এ অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করবেন 
  • ফাটা ঠোঁটে লিপ বাম ব্যবহার করবেন। 
  • হাতে পায়ে অলিভ অয়েল মাখতে পারেন। 
  • খুশকি কমাতে নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। 
  • গরম বা শীত যেকোনো সময় বাহিরের যাওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। এটি সূর্যের রশ্মির  পোড়া ভাব,  ছোপ ছোপ কালো ভাব, দাগ ও সানর্বান দূর করতে সাহায্য করবে। তবে সানস্ক্রিন এর এসপি এফ ৪০থেকে ৫০ কিনা দেখে নিবেন। 
  • সেনসেটিভ স্কিন হলে গোসলের পর শেভ করবেন। কেননা এই সময় দাড়ি নরম থাকে। ত্বকে শেভিং জেল বা ত্বককে মসৃণ রাখে এমন জেল ব্যবহার করতে পারেন। 
  • ছেলেরা মাসে ১ বার হাইড্রা ফেসিয়াল নিতে পারেন। এটি ত্বকের টোন ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
  • সর্বশেষ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন এবং ভালো ঘুম দেওয়ার চেষ্টা করবেন। 

শীতে কি ব্যবহার করলে চেহারা ফর্সা বা উজ্জ্বল হয়

অনেকেরই প্রশ্ন থাকে বা জানার আগ্রহ থাকে শীতে কি ব্যবহার করলে চেহারা ফর্সা বা উজ্জ্বল হয়। তবে চলুন বিস্তারিত জেনে নিন। শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ময়েশ্চারাইজার, ক্রিম ইত্যাদির পাশাপাশি ঘরোয়া উপায়েও ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে পারেন। ইতিমধ্যে আমরা  শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় এর অনেক টিপস উপরে দিয়ে আসছি। যেগুলো নিয়মিত মানলে স্কিন এমনিতেই সুন্দর ও সতেজ থাকবে। তারপরও ত্বক ফর্সা করতে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। 

  •  পাকা পেঁপে মধুর সাথে মিশিয়ে মুখে লাগান। দেখবেন মুখ দারুণ চকচক করছে। 
  • নারিকেল তেল এর সাথে ভিটামিন ই মিশিয়ে লাগান। এটি ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করে। 
  • আলুর রসের সাথে অ্যালোভেরা জেল লাগান। এতে মুখের দাগ দূর করে, ত্বক সুন্দর করে। 
  • কাচা দুধের সাথে নারিকেল তেল ভালো ভাবে মিশিয়ে লাগান।এটি ত্বক সুন্দর ও কোমল করে।
  • কলার পেস্ট চিনি দিয়ে মুখে লাগান, এটি মুখ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। 
  • চন্দন গুঁড়া, পাকা কলা, দুধ এর ফেইসপ্যাক এটিও ত্বকের জন্য চমৎকার কাজ করে। 
  • পাকা কলা, পাকা পেঁপে ও ময়দা দিয়ে প্যাক তৈরি করে লাগাইত পারেন। ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করবে। 
  • বেসন,মধু ও টকদই এটিও ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে দারুণ কাজ করে। 

শীতকালে ত্বকের যত্ন 

শীতের দিনে আবহাওয়ায় ত্বক খুবই রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। তাই ত্বককে হাইড্রেটেড এবং ময়েশ্চারাইজাইড রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই ভালো ভাবে ত্বক পরিষ্কার রাখা এবং ক্রিম মাখা ও ময়েশ্চারাইজার ম্যাসাজ করা সাথে সঠিক পরিমাণে পানি পান করা খুবই প্রয়োজন। অবশ্যই ত্বকের ধরন অনুযায়ী  ডেইলি ব্যবহার করার প্রোডাক্ট গুলো বেছে নিবেন।এবং ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখবেন

শীতে-ত্বকের-উজ্জ্বলতা-বৃদ্ধির-উপায়

ত্বকের ধরন অনুযায়ী স্ক্রাব করতে পারেন। এতে ত্বক অনেক সুন্দর হবে। শীতে অবশ্যই ভালো সাবান ব্যবহার করবেন। যারা সাবান ব্যবহার করেন তারা চেষ্টা করবেন ক্রিম বেসড সাবান ব্যবহার করতে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ভাব বজায় রাখে। ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক থেকে রক্ষা পাবে। শীতে ত্বকের যত্ন এ বেশি কিছু না এগুলো নিয়ম মতো মেনে চললেই আপনার ত্বক সুস্থ ও লাবন্যময় থাকবে।

  শীতে মুখ কালো হয়ে যায় কেন

শীত মুখ কালো হয় কেন বলুন তো।চলুন বিস্তারিত জেনে নিন। প্রথম সমস্যা হলো সানস্ক্রিন ব্যাবহার না করা। শীতে রোদ এ বসে থাকতে অনেকেই পছন্দ করে যার ফলে ত্বক কালো হয়ে যায়। তাই অবশ্যই অবহেলা না করে সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। আরেকটা সমস্যা হলো ঠিক মতো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করা। যার ফলে ত্বক কালো হয়ে যায়। 

আবার অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি ব্যবহার করলেও ত্বক কালো হয়ে যায়। এছাড়াও ত্বককে ঠিক মতো স্কাবিং করে না ঠিক মতো। এতে স্কিনে বিভিন্ন ডেড সেল, ময়লা, মূত কোষ তৈরি হয়।যার ফলে ত্বক কালো দেখায়। অনেকেই আছেন শীতে লেবু ব্যবহার করেন যার ফলে ত্বক কাল দেখায়।তাই শীতে লেবু ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন। অতিরিক্ত ঘন ঘন মুখ ধুবেন না এতে ত্বকের তৈল নষ্ট হয়ে যায় এবং ত্বক শুষ্ক ও কালো হয়ে যায়। 

শেষ কথাঃ শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি ভালো লেগেছে এবং প্রয়োজনীয় টিপস গুলো জানতে পেরেছেন। শীত মানে কুয়াশা ভরা সকাল। শীত মানে হিমেল হাওয়া। শীত মানে  বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলির উৎসব।

আবার এই শীত মানে আমাদের ত্বকের হাজার রকমের সমস্যা। তবে চিন্তিত হবার কিছুই নেই।একটু সচেতনতা ও যত্নের মাধ্যমে দূর হতে পারে এই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। তাই শীতের শুরু থেকেই ত্বকের যত্ন নিতে শুরু করে দিন এবং সুন্দর ও সতেজ রাখুন নিজেকে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লানিং টিপস ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url